spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

পাখির বাসা বাঁচাতে চল্লিশ দিন অন্ধকারে পুরো গ্রাম

spot_img

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: গ্রামে বিদ্যুতের কমিউনিটি সুইচবোর্ডের মধ্যে বাসা বেঁধেছিল একটি পাখি। সেই বাসায় নীলচে-সবুজ রঙের তিনটি ডিমও পাড়ে পাখিটি। সেটা দেখতে পান এক ব্যক্তি।

হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সেই পাখির বাসার ছবি পোস্ট করেন তিনি। এরপরেই গ্রামবাসী সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত নেন, ডিম ফুটে বাচ্চা বের না হওয়া পর্যন্ত তারা আলো জ্বালাবেন না। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী টানা ৪০ দিন অন্ধকারে পুরো গ্রাম। এ ঘটনা ভারতের তামিলনাড়ুর শিবগঙ্গা জেলার পোথাকুড়ি গ্রামের।

টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, পোথাকুড়ি গ্রামের বাসিন্দা স্ট্রিট লাইটের ইনচার্জ কারুপ্পু রাজার নজরে আসে ছোট্ট বুলবুলি পাখিটি (ইন্ডিয়ান রবিন)। কলেজপড়ুয়া কারুপ্পু রাজা জানান, তার বাড়ির একদম কাছেই রয়েছে কমিউনিটি সুইচবোর্ড। গ্রামে মোট ৩৫টি স্ট্রিট লাইট রয়েছে।

সেগুলোর সব সুইচ রয়েছে এখানে। মারাভামঙ্গলমের কাছে সেথাম্বল পঞ্চায়েতের ওই গ্রামের বাসিন্দা কারুপ্পু রাজা। তার কথায়, লকডাউন শুরু হতেই আমি দেখি একটি পাখি খড়, গাছের পাতা বক্সের মধ্যে নিয়ে যাচ্ছে। যখন বোর্ডের ঢাকনা খুলে দেখি, সেখানে তিনটি ছোট্ট ছোট্ট সুবজ-নীলচে ডিম।

তখনই গ্রামের যুবকরা সিদ্ধান্ত নেন, যেভাবেই হোক পাখি ও তার ডিমগুলো রক্ষা করবেন। সেই সিদ্ধান্ত পাকা করতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়। গ্রামের সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, পাখিটিকে শান্তিতে বাসার মধ্যে থাকতে দেয়া হোক। ডিম ফুটে ছানা যতদিন বড় না হচ্ছে ততদিন এ লড়াইটা চলবে।

গ্রুপের সবাই রাজি হলেও গ্রামের ১০০ পরিবারকে বোঝানো ছিল কিছুটা কষ্টকর। বাসা থেকে যতক্ষণ পাখি ও তার ছানাগুলো উডড়ে যাচ্ছে, ততদিন কী গ্রামের মানুষ অপেক্ষা করবেন? কিছু মানুষ ওই ছোট্ট পাখির জন্য গোটা এক মাস আলো নিভিয়ে রাখাটা ‘নির্বোধ’ আখ্যা দিলেন। তাদেরও কোনোভাবে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন এলাকার যুবক-যুবতীরা।

গ্রামের এক বাসিন্দা সেলভি জানান, এ ক’দিন ধরে মোবাইলের আলো, টর্চলাইট ব্যবহার করেই কাটিয়েছি। তাতে কোনো অসুবিধা হয়নি। পাখির আচরণের ওপর লক্ষ রাখার দায়িত্ব ছিল মূর্তি ও কার্তি নামের দুই ভাইয়ের ওপর। তারা প্রতিদিনই বাক্স খুলে একবার করে দেখে আসত-কী অবস্থায় রয়েছে সবাই। মা পাখি উড়ে যেতেই চোখ রাখত বাসার ওপর। দিনে দিনে একটু একটু করে বড় হচ্ছে পাখির ছানাগুলো।

তাদের গায়ে এখন অল্প অল্প ছোট পালক গজিয়েছে। দুটি পাখা গজিয়েছে। মা পাখির মতো রংও ধারণ করেছে সেগুলো। তাদের কথায়, ?‘আমরা প্রতিদিন বাসাটা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করি। কোনো বিদ্যুতের তার ঝুলে রয়েছে কি না, দেখি। এর মধ্যে অন্য কোনো হামলা হয়েছে কি না-সব দিকেই নজর রাখি আমরা।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ