spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

এবার কারাগারে মাদকবিরোধী অভিযান, চাকরিচ্যুতসহ ১৪ রক্ষীকে বদলি

spot_img

 

- Advertisement -

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি কারাগারগুলোতেও চলছে মাদকবিরোধী অভিযান। মাদক সংশ্লিষ্টতায় জড়িত দেশের ৬৮ কারাগারে আটক কারাবন্দী ও কারা কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নেমেছে কারা অধিদপ্তর।

ইতোমধ্যে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মঙ্গলবার শরীয়তপুর জেলা কারাগারের তিন কারারক্ষীকে চাকরিচ্যুত করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। ওই তিনজন হলেন, মুন্সিগঞ্জের মো. সালাউদ্দীন আহমেদ (ব্যাচ নং ১২৩৮০), রাজবাড়ীর পলাশ হোসেন (ব্যাচ নং ১৩২৭৭) ও কিশোরগঞ্জের ফারুখ হোসেন (ব্যাচ নং ১৩০০৭)। এদের মধ্যে সালাউদ্দীন ১৬ বছর, পলাশ ১১ বছর ও ফারুখ ১২ বছর ধরে দেশের বিভিন্ন কারাগারে কর্মরত ছিলেন।

এ ছাড়া সদরদপ্তর থেকে মাদকসহ, কারাবিধি লংঘন ও শৃংখলা ভঙ্গসহ বিভিন্ন অভিযোগে ১৪ জন কারারক্ষীকে নিজ বিভাগের বাইরে দেশের বিভিন্ন কারাগারে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আরো ৬০ থেকে ৭০ জন কারারক্ষী ও কর্মকর্তার মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টার অভিযোগের তদন্ত করছে কারা কর্তৃপক্ষ।

কারা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কারাগারগুলোতে যেকোনো প্রকার মাদকের প্রবেশ বন্ধে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বনসহ পরীক্ষাপূর্বক সকল কারা কর্মচারীকে কারাগারে প্রবেশের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পরীক্ষার সাথে যুক্তরা দায়িত্বে অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মাদক সংশ্লিষ্ট যে কোনো প্রকার তথ্য নিয়মিত বিভাগীয় প্রধান হিসেবে ডিআইজি প্রিজন্সদের প্রদান করতে কারা গোয়েন্দাদেরকে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, কারাগারে আটক বন্দীর ক্ষেত্রে জেলকোড অনুযায়ী শাস্তির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এছাড়া কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাময়িক বরখাস্ত, ফৌজদারী অপরাধে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, ইনক্রিমেন্ট স্থগিত বা পদোন্নতি বন্ধ, এসিআরে বিরুপ মন্তব্য করা, তদন্তপূর্বক স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা, বিভাগীয় মামলা দায়ের করা ও নিজ বিভাগের বাইরের বিভাগে বদলি ও নিজ জেলা থেকে সর্বোচ্চ দূরের কারাগারে বদলী করা হচ্ছে।

কারা সূত্র জানায়, কারারক্ষী পলাশ হোসেনকে এর আগেও মাদক গ্রহণের দায়ে দুই দফা বরখাস্ত করাসহ শরীয়তপুর থেকে গাজীপুর জেলা কারাগারে সংযুক্ত করা হয়। সেখানে কর্মরত অবস্থায় গত বছরের ১৪ অক্টোবর পলাশ এক পিস ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। পরে ১ মাস ৫ দিন কারাভোগের পর কাশিমপুর পার্ট ২ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্ত হন।
অপরদিকে মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের কারারক্ষী মো. রায়হান উদ্দীন ও আশরাফুল ইসলামকে শাস্তিমূলক বদলী করেছে কারা অধিদপ্তর। এছাড়া কারাবিধি লংঘন, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, কারা শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগসহ বিভিন্ন অপরাধে দেশের বিভিন্ন কারাগারের ১২ জন কারারক্ষীকে নিজ বিভাগের বাইরে শাস্তিমূলক বদলী করেছে কারা অধিদপ্তর।

চট্রগ্রাম বিভাগের ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিক বলেন, গত সপ্তাহে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের মাদকাসক্ত কারারক্ষী রনি বড়ুয়া (ব্যাচ নং ২২৮৪৭) এক মহিলা কারারক্ষীর বাসায় নেশার টাকার জন্য চুরি করতে গেলে হাতেনাতে তাকে ধরে ফেলেন স্থানীয় লোকজন। পরে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ ফৌজদারী মামলা দায়ের করে পুলিশের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কুমিল্লা কারাগারে রয়েছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বিভাগের কারা মহাপরিদর্শক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মাদক সংরক্ষণ, সেবন এবং বন্দিদের সরবরাহের অভিযোগে গত এক বছর ধরেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা। গত বছরের মার্চ মাসে শরীয়তপুর কারাগারের তিন কারারক্ষীর বিরুদ্ধে ইয়াবা সেবনের অভিযোগ আসে। পরে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর বিভাগীয় তদন্তে প্রমাণ পাওয়ায় মঙ্গলবার তাদের স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়। কারা কর্মকর্তা তৌহিদুল বলেন, বর্তমানে জেলার, ডেপুটি জেলার এবং কারারক্ষীসহ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জনের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নিয়ে তদন্ত চলছে। সবাইকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে জানিয়ে তৌহিদুল বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ মাদকের ব্যাপারে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি অনুসরণ করে থাকে। অপরাধ অনুযায়ী তাদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়া হবে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ