চলমান মাদকবিরোধী অভিযান আরো সতর্কতার সঙ্গে চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, কোনোভাবেই নিরপরাধ মানুষ যেনো হয়রানির শিকার না হন।
কক্সবাজারের একরামুল হক এবং গাজীপুরে কামুর ঘটনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তাছাড়া অভিযোগ উঠেছে, অনেকে ব্যাক্তিগত শত্রুতার জের হিসেবেও মামলা হামলার শিকার এবং গ্রেফতার হচ্ছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন , জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
এদিকে বিরোধী দলছাড়াও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও অভিযানে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের বিরোধীতা করেছেন এবং এটি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। এসব দিক বিবেচনা করে এবং খোঁজ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীকে বলেছেন, কেউ যেনো অযথা হয়রাণির শিকার না হন, সেটি খেয়াল রাখতে হবে।
আওয়ামী লীগ দলীয় একটি বিশেষ সূত্র বলেছে, একরাম ও কামুর ঘটনার পরই প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন অভিযানে আরো সতর্ক হতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মনে করেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় অনেক ধরণের ষড়যন্ত্র দেখা দেয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে অনেক ভুল তথ্যের ভিত্তিতে তালিকার বাইরের কেউ কেউ পরিস্থিতির শিকার হতে পারে। তবে সেটা কোনো ভাবেই হত্যার পর্যায়ে যেনো না যায়। তিনি বলেছেন, দুই একটি ভুল ঘটনা পুরো অর্জনকে ভন্ডুল করবে এটা তিনি চান না।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনার পর গত দুদিন থেকে বন্দুক যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা কমে গেছে। শুরুর দিকে প্রতি রাতেই ৯ থেকে ১২ জন করে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। কিন্তু গত দুদিনে এই সংখ্যা ৫/৬ এ চলে এসেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অভিযান আরো সতর্ক হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলা হয়েছে, নিরপরাধ কেউ হত্যার শিকার হলে এবং হয়রাণির শিকার হলে তদন্ত করা হবে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলেও তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কর্নেল (অব) ফারুক খান বলেছেন, এই অভিযানটি সফলভাবেই হচ্ছে। তবে নেত্রী (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, কোন ভুল করা যাবে না। বিশেষ করে দূর্ধর্ষ কাউকে ধরতে গেলে শতভাগ নিশ্চিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কেউ যেনো দাবি করতে না পারে ওমুক লোকটি মাদকের সঙ্গে কখনোই জড়িত ছিলো না।