spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

‘আমাদের অনৈক্য আর ক্ষুদ্রতার কারণেই সরকার যা খুশী করতে পারছে’

spot_img

 

- Advertisement -

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও গণজাগরন মঞ্চের অগ্নিকন্যা লাকি আক্তারের বাসায় গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর রাতে পুলিশ এসেছিল। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

তার লেখায়, লাকী আক্তারের বাসায় পুলিশী তান্ডবের তীব্র নিন্দা করছি। যারা লাকীর এ দুরবস্থায় উল্টো তাকে নিয়ে আজেবাজে কথা লিখছেন তাদেরও নিন্দা করছি। লাকী কোটা আন্দোলনের পক্ষে দাড়িয়ে পুলিশী অভিযানের শিকার হয়েছেন। এ অবস্থায় তার সমালোচনা করার মানে হচ্ছে অত্যাচারীর শক্তি ও সাহস বাড়ানো, নিপীড়নকে উৎসাহিত করা। আমাদের এসব বিভেদ, অনৈক্য আর ক্ষুদ্রতার কারনেই এ সরকার যা খুশী করতে পারছে।

প্রসঙ্গত, লাকী তার ফেসবুকে লিখেছেন, আমার বাসায় ভোররাত সোয়া ৪টা নাগাদ ডিবি পুলিশ অভিযান চালায়। ৮-১০ জনের একটা দল আসেন তারা। শুরুতে তারা বেশ উত্তেজিত ছিলেন। আমি জানতে চাইলাম এত রাতে কোন অভিযোগে আমার বাসায় তল্লাশি করবেন তারা। তর্কা-তর্কির এক পর্যায়ে তারা দরজা ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। আমি বললাম আপনারা সকালে আসেন। অনেকক্ষণ বাক-বিতন্ডার পর অবশেষে তারা বাড়িওয়ালা আঙ্কেলকে নিয়ে আসলে সাড়ে চারটার দিকে আমি দরজা খুলি।

ক্যাম্পাসে আমার ডিপার্টমেন্টের ছোটভাই এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠক সুহেল আমার বাসায় ছিল। তারা তাকে তুলে নিয়ে গেছে। যাওয়ার আগে বাসার কম্পিউটারের হিস্ট্রি চেক করেন। এছাড়া সুহেল যে রুমে ছিল সেখানে তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালান। সুহেলের ব্যবহৃত একটি ফোন ছাড়া আর কিছুই তারা পাননি।

প্রায় দেড় ঘন্টা তারা আমার বাসায় অবস্থানকালে সুহেলকে আলাদারুমে হাতকড়া পরিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় আমাদের সব ফোনগুলো তারা জব্দ করে রাখেন। আমার ফোনও তারা চেক করেন। যদিও ঘরে প্রবেশ করার পর আমাদের কারও সাথে উত্তেজিত আচরণ করেননি তারা।

সুহেলকে নিয়ে যাওয়ার আগে আমি জানতে চাইলাম ওর বিরুদ্ধে অভিযোগ কী। তারা বললেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন ইস্যুতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। আমার বাসায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের লিফলেট-পোস্টার আছে কিনা জানতে চান। বাসায় সেরকম কোনো কিছু না থাকায় আমি তাদের দেখাতে পারিনি। তবে সেজন্য তারা বাড়তি কোনো তল্লাশিও করেননি।

যাওয়ার আগে সুহেল আমাকে অনুরোধ করেছে তার মাকে যেন কিছু না জানানো হয়। কিছুদিন আগে তার বাবা মারা গেছেন। সম্প্রতি কোটা আন্দোলনে জড়িত থাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলারও শিকার হয় ও। এরপর এ ঘটনায় তার মা আরও ভেঙে পড়তে পারেন।

ঘটনা যা ঘটেছে তা-ই সবাইকে জানানোর চেষ্টা করলাম। আমি বা আমার পরিবার এ ঘটনায় মোটেও ভীত নই। কিন্তু যখন তখন সাদা পোশাকে নাগরিকদের ঘরে হানা দেওয়ার এই সংস্কৃতি একজন নাগরিক হিসেবে আমাকে শংকিত করে। তবে কি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত থাকলে মানুষকে এভাবে আতঙ্ক নিয়ে রাত কাটাতে হবে?

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ