ছবি-৬
আকমুল জাহান জ্যাকলিন : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম বীর প্রতীক বলেছেন, বন্যার পানি সম্পূর্ণভাবে নামার পর পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু হবে।তিনি বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা স্ব স্ব অভিজ্ঞতা আমাদের কাছে শেয়ার করেছেন। এর আলোকে যে পুনর্বাসন কর্মসূচি হবে, তার একটা ধারণা পেলাম। আজ দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে জেলার সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি। বন্যা ও বন্যাপরবর্তী পরিস্থিতি জানার জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়ে এ সভা আহ্বান করা হয়েছে জানিয়ে উপদেষ্টা ফারুক ই-আজম বলেন, যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন করা হবে। এখনও ত্রাণ কার্যক্রম চলমান আছে। বন্যার পানি সম্পূর্ণভাবে নামার পর পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করবো।
ফারুক ই আজম বলেন, আমি মাঠপর্যায়ের বন্যা এবং বন্যাত্তোর পরিস্থিতি জানার জন্য সব কর্মকর্তাদের আহ্বান করেছিলাম। তাদের কাছ থেকে মাঠপর্যায়ে কি পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার বাস্তব চিত্র পেলাম। এটার নিরিখেই আগামী দিনের পুনর্বাসন কর্মসূচি নিয়ে আমরা একটা ধারণা পেলাম। আর এটার ভিত্তিতেই আগামীদিনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হবে।
পুনর্বাসন কার্যক্রমে জনগণকেও সম্পৃক্ত করা হবে জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের এ উপদেষ্টা বলেন, আগামীর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া হবে বস্তুনিষ্ঠ। আমরা এটাকে সঠিকভাবেই সম্পন্ন করব। পদ্ধতিগতভাবেই হবে। এটার জন্য প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে হবে। আর এতে জনগণকে সম্পৃক্ত করা হবে, যাতে মানুষ যেন জানতে পারে কি হচ্ছে, কেন হচ্ছে এবং কোথায় কোথায় হচ্ছে।
শুরুতে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখন ত্রাণ কার্যক্রম চলছে। পানি নেমে গেলে পুনর্বাসনের দিকে যাব আমরা। জনস্বাস্থ্যের দিকেও সরকার বিশেষ নজর দিচ্ছে। বন্যায় পানিবাহিত নানা রকম রোগ হচ্ছে। সেগুলো আমরা চিহ্নিত করছি। অগ্রাধিকারভিত্তিতে একটার পর একটা কাজ শেষ করা হবে।
ফেনী-নোয়াখালীসহ বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে ফারুক ই আজম বলেন, আমি দেখেছি পানিবন্দি মানুষ এখনো রয়েছে। সেখানে শুকনো এবং রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে ফেনীসহ বিভিন্ন এলাকায় দুর্গম হওয়ায় এবং সেখানে নৌকার সংস্কৃতি না থাকার কারণে দূরদূরান্ত থেকে নৌকা, সেনাবাহিনীর বোটসহ বিভিন্ন পরিবহন এনে দূরবর্তী মানুষের কাছে যেতে সময় লেগেছে এটা সত্যি। কিন্তু আন্তরিকভাবে ত্রাণ দেওয়ার আগ্রহের কোনো কমতি ছিল না। এটা আমাদের শক্তি জুগিয়েছে।
আমরা দেখেছি অদ্ভূত এক পরিবর্তন হয়েছে দেশে। আমরা উপলব্ধি করেছি ত্রাণ কার্যক্রমে মানুষের উচ্ছ্বাস। মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছে, এ ত্রাণের কাজে। সেটা সরকারের জন্য মস্তবড় শক্তি। এ কারণে সরকারের জন্য মানুষের কাছে যাওয়া এবং সেবা দেওয়া সহজ হয়েছে। পানি পুরোপুরি না নামায় মানুষজনকে স্বাভাবিকজীবনে ফিরিয়ে দিতে কিছুটা সময় লাগবে।
এসময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি উপস্থিত ছিলেন।