চট্টগ্রাম মহানগরে স্বল্পদামে সবজি কিনতে শত শত নারী-পুরুষের ভীড় লক্ষ করা গেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উদ্যোগে শুরু হয় ন্যায্যমূল্যে কৃষিপণ্য বিক্রয় কর্মসূচি। চকবাজার, দেওয়ানহাট, ষোলোশহর, ফিরিঙ্গিবাজার ও ফিরোজশাহ এলাকায় এ কর্মসূচি চলেছিল। এখানে এক ডজন ডিম ১৩০ টাকা, আলু এক কেজি ৩০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, করলা ৪০ টাকা, পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এটুকু কিনতে শতশত মানুষের ভিড়।
এদিকে খোলাবাজারে কৃষিপণ্য বিক্রি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম ও চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
উদ্বোধনের পর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম বলেন, বিগত সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে বন্যা হয়েছে। এতে যেসকল শীতকালীন সবজি বাজার স্থিতিশীল রাখে সেসকল সবজি বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিরুপ প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে ডিম ও সবজির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য এ কর্মসূচি।
চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, বাজারে যেসব পণ্যের দাম বেশি সেগুলো কম দামে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে কিনে ভর্তুকিমূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ট্রাকের পেছনে নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারি। ৪৫০ টাকায় দুই কেজি পেঁয়াজ, এক ডজন ডিম, ৪ কেজি আলু, এক কেজি পেঁপে এবং এক কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে।
নগরের গোয়াছি বাগান এলাকা থেকে এসেছিলেন টং দোকানি নুর হোসেন। তিনি বলেন, সংসারে টানাপোড়ন চলছে। মাছ-মাংস নিলে সবজি নিতে পারি না, সবজি নিলে মাছ মাংস নিতে পারি না। কমদামে সবজি ডিম বিক্রির খবর শুনে দোকানে ছোট ভাইকে রেখে এসেছি। বাজারে এগুলো কিনতে গেলে আরও দুই-তিনশ টাকা বেশি লাগতো।
গৃহিনী আমেনা বেগম বলেন, বাজার করতে এসেছিলাম। কাঁচাবাজারে যাওয়ার আগেই ট্রাক দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। প্রথমে ভেবেছিলাম টিসিবি পণ্য বিক্রি হবে। ঘরে ছোট ছেলেকে বললাম কার্ড নিয়ে আসতে। পরে দেখি সবজি, ডিম, পেঁয়াজ এসব। আমার ছেলে এলে তাকেও দাঁড়াতে বলবো।
সিএনজি অটোরিকশাচালক মোহাম্মদ রতন, দিনমজুর মো. আবুল কাসেম। কমদামে কৃষিপণ্য বিক্রির খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন। তারা বলেন, কমদামে ডিম, আলু, পেঁয়াজ কিনতে পারলে ঘরের টানাপড়েন কিছুটা হলেও তাদের কমবে।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম নগরে শুরু হয়েছে খোলা বাজারে কৃষি পণ্য বিক্রি (ওমএমএস)। প্রতি স্থানে ২০০ জন করে মোট এক হাজার জনকে কৃষিপণ্য দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে আগামী মাসের ১০ থেকে ১৫ তারিখ পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলবে।