spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

চট্টগ্রামে ছাত্র বিক্ষোভে গণপরিবহন সংকট: সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ

spot_img

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : সারাদেশের ন্যায় ছাত্র বিক্ষোভে গণপরিবহন সংকটে দুর্ভোগ পড়েছেন সাধারণ মানুষ। নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আর ‘নিরাপত্তার’ নামে অঘোষিত পরিবহণ ধর্মঘটে মহানগরীতে গণপরিবহণ সংকট দেখা দেয়ায় এ জনদূর্ভোগ বেড়েছে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন সংকটে দুর্ভোগ বেড়ে চলেছে। নগরসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে গণপরিবহণ রাস্তায় চলাচল করছে না। তবে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। যেটি প্রয়োজনের তুলনায় অতি নগন্য। এদিকে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়েছিলেন জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী হাকিম। ওয়াসা মোড়ে যেখানে হাকিম সৈয়দ মোরাদ আলী ঘেরাওয়ের মুখে পড়েছিলেন; সেখানে শিক্ষার্থীরত শিক্ষার্থীদের কাছে ছাত্রদল, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কিছু কর্মীর অবস্থানও দেখা গিয়েছিল।

- Advertisement -

বহদ্দারহাট মোড়ে গণপরিবহণের অপেক্ষায় থাকা রবিউল হোসেন রাসেল নামে এক চাকুরিজীবী জানান, যথারীতি আগ্রাবাদ অফিসে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বেরিয়েছি। কিন্তু রাস্তায় এসে দেখি কোন বাস নেই। শত শত যাত্রী বহদ্দারহাট মোড়ে বাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কোন বাস নেই। এদিকে, অফিসের সময়ও পার হয়ে যাচ্ছে। খুব সমস্যায় পড়ে গেলাম। একইভাবে, নগরের মুরাদপুর, চকবাজার, ২ নম্বর গেইট, কালুরঘাট, আন্দরকিল্লা, নিউ মার্কেট, কাজিরদেউরিসহ বিভিন্ন এলাকায় যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। নগরের বেশিরভাগ দূরপাল্লার কাউন্টার বন্ধ রাখার কারণে কিছু কিছু যাত্রীকে কাউন্টারের সামনে ফিরে যেতে দেখা গেছে।
এদিকে কোন ধর্মঘট আহ্বান করা হয়নি উল্লেখ করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের পূর্বাঞ্চলীয় সভাপতি মৃণাল চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তার অভাবে হয়তো চালকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না। শিক্ষার্থীরা যেহেতু সড়কে গাড়ি থামিয়ে বৈধ কাগজপত্র ও লাইন্সেস দেখছে, তাই হয়তো অনেকে গাড়ি রাস্তায় নামায়নি। যাদের ড্রাইভিং লাইন্সেস ও বৈধ কাগজপত্র নেই। তবে আামরা আনুষ্ঠানিকভাবে কোন ধর্মঘট ডাকিনি। চালকরা নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে চালকরা গাড়ি চালাচ্ছেন না। পাশাপাশি নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কোন বিরোধে না যাওয়ার জন্য পরিবহন সেক্টরের সকলকে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান এ পরিবহন শ্রমিকনেতা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলের এক ছাত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সরকার আমাদের দাবি মেনে নিয়েছে বললেও এসব দাবি বাস্তবায়নে তেমন অগ্রগতি নেই। আমাদের ৯ দফা দাবির বাস্তবায়ন শুরু করে নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করলে আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেবো। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনেরও হস্তক্ষেপ কামনা করেন এ শিক্ষার্থী। এদিকে বিক্ষোভ চলাকালে ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এক নির্বাহী হাকিম। ওয়াসা মোড়ে যেখানে হাকিম সৈয়দ মোরাদ আলী ঘেরাওয়ের মুখে পড়েছিলেন। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রঞ্জন চন্দ্র দে বলেন, তাদের বুঝিয়েছি সরকার নয় দফা দাবি মেনে নিয়েছে। সেগুলো বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে। এরপর তারা আস্তে আস্তে চলে গেছে। তবে অন্যান্য স্থান থেকে সরে যাওয়া শিক্ষার্থীরা ওয়াসার মোড় এলাকায় গিয়ে জড়ো হয়।
জানা গেছে, বিএএফ শাহীন কলেজ, ইস্পাহানি কলেজ, আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, সরকারি মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়, মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, বেসরকারি পোর্ট সিটি বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল ও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর শিক্ষার্থীরা সেখানে ছিলেন। শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে ¯েøাগান দিতে থাকে। তাদের সুশৃঙ্খল থাকার আহ্বান জানিয়ে সেখানে পুলিশকেও মাইকিং করতেও দেখা গেছে। ওয়াসার মোড়ে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটি বড় অংশকে নগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা গেছে। ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের কিছু কর্মীও সেখানে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বাম সংগঠনের নেতৃত্বে একদল শিক্ষার্থীও আলাদা অবস্থান নিয়ে ¯েøাগান দিচ্ছিল। এ সময় শিক্ষার্থীদের সড়ক থেকে তুলতে চেষ্টা করছিলেন নির্বাহী হাকিম মোরাদ আলী। তিনি বলেন, শুরুর দিকে তাদের বোঝাতে সক্ষম হই। পরে কিছু ছেলে পেছন থেকে এসে বলে- ‘তুই এক্সপেল করেছিলি না? তুই ভুয়া’। এরপর তারা আমার গাড়ি ঘিরে ফেলে এবং অকথ্য ভাষায় বিভিন্ন ¯েøাগান দেয়। আমার গাড়ির উপর অশ্রাব্য একটা ¯েøাগান লিখে দেয়। পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখান থেকে চলে আসি।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ