সরকারের অবসান ঘটানোর জন্য মানুষ প্রস্তুত

সরকারের অবসান ঘটানোর জন্য বাংলাদেশের মানুষ প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইয়ুথ ফোরামের আয়োজনে ‘বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন, জাতীয় সংকট সমাধানে একমাত্র পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। মওদুদ বলেন, দেশের মধ্যে যারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চান তারা আজ ঐক্যবদ্ধ হওয়া শুরু করেছেন। গণতন্ত্রকামী সকলে মিলে একটা জাতীয় ঐক্য হবে। কারণ, আমরা গুম দেখতে চাই না। হত্যা, অপহরণ দেখতে চাই না।
তিনি বলেন, যখন কোটা আন্দোলন হলো সবাই বললো খুব ভালো। সরকারও বললো ভালো। দুই চারদিন যাওয়ার পর তাদের উপর সরকার চড়াও হলো। গ্রেপ্তার করা শুরু করলো। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনেও একই অবস্থা হলো। আমার ভয় হয়, কারণ ড. কামাল হোসেনরা যখন জাতীয় ঐক্য নিয়ে আলোচনা শুরু করলো তখন সরকার বললো ভালো। গণতন্ত্রের জন্য ভালো আলোচনা। কিন্তু এখন ঐক্য জোরালো হয়ে সামনের দিকে যাচ্ছে। তাই সরকারের ভেতর ভয় ঢুকে গেছে। সামনের দিনে যখন এই ঐক্য জনমত তৈরি করবে তখন হয়তো এই সরকারই সবার আগে আঘাত হানার চেষ্টা করবে। কোটা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরতদের যেভাবে আঘাত করেছে, গ্রেপ্তার করেছে সেভাবে আঘাত ও গ্রেপ্তার করবে। মওদুদ বলেন, নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে তত সরকার এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। নির্বাচনী বিধিমালা (আরপিও) সংশোধনের মাধ্যমে নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু সরকার যতই আরপিও সংশোধন করুন, আর মিথ্যাচার করুন; এবার আর অত্যাচার করতে পারবেন না। বাংলাদেশের মানুষ আজকে প্রস্তুত হয়েছে সরকারের অবসান ঘটানোর জন্য। তিনি বলেন, সামনে জাতীয় ঐক্য হবে, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে। সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ গণতন্ত্র ফিরে পাবে। এখন বাংলাদেশে একটি মাত্র ইস্যু। এখানে মানুষের স্বাধীনতা নেই, কথা বলার অধিকার নেই, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। এগুলো ফিরিয়ে আনা এখন একমাত্র কাজ। তিনি বলেন, যে দেশে ব্যাংকের টাকা হ্যাকিং-এর মাধ্যমে বেহাত করা যায় সে দেশে নির্বাচনে ভোট গ্রহণে মেশিন ব্যবহার করা নিয়ে কোনোভাবেই জনগণের আস্থা নেই। কারণ এই মেশিন নিয়ন্ত্রণ করবে নির্বাচন কমিশন। যাদের উপর আমাদের আস্থা নেই। এই জন্য নির্বাচনে ইভিএম মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত আমরা প্রত্যাখ্যান করি। ব্যালটে ভোট হলে তাতে সমস্যা দেখা দিলে পুনরায় গণনা করা যাবে। কিন্তু ইভিএম-এ সমস্যা দেখা দিলে পুনরায় গণনার কোনো সুযোগ নেই। হ্যাকিং হলেও বোঝার উপায় নেই। সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, নোয়াখালী বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল বাকি ও জাতীয় নাগরিক মঞ্চের সভাপতি ইসমাইল তালুকদার খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।মানবজমিন