ডেস্ক রিপোর্ট: রংপুরে মানহানির মামলায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের জামিন না মঞ্জুর করেছে আদালত। রংপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা তার জামিন না মঞ্জুর করে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন।
গত ২২শে অক্টোবর রংপুরের নারী অধিকারকর্মী মিলি মায়া বেগম নারী সাংবাদিককে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করায় মানহানির মামলা দায়ের করেন। হাজিরা দেয়ার জন্য গত শনিবার বিকেলে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
আদালতে আধা ঘণ্টা উভয়পক্ষের যুক্তি-তর্ক শোনার পর রংপুর অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আরিফা ইয়াসমিন মুক্তা মইনুল হোসেনের জামিন না মঞ্জুর করে তাকে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রেরণ করেন। এদিকে মইনুল হোসেনকে কারাগারে নিয়ে যাওয়ার সময় অন্য মামলায় জামিন নিতে আসা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা আদালত চত্ত্বরে খালেদা জিয়ার পক্ষে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও পাল্টা শ্লোগান দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি, টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
এ ব্যাপারে ব্যারিস্টার মইনুলের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট থেকে আসা আইনজীবি অ্যাড. মাসুদ রানা বলেন, ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের নামে যে মামলাটি হয়েছে রংপুরে সেটি চলতে পারে না। মাসুদা ভাট্টি ঢাকায় যে মামলা করেছেন সেখানে তিনি জামিন পেয়েছেন। এ মামলায় জামিন পাওয়ার যোগ্য তিনি।
আদালতে মইনুল হোসেন বলেছেন, তাকে গাড়ি থেকে নামানোর পর পুলিশের ছত্র ছায়ায় সরকারী দলের লোকজন ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে তাকে আহত করেছে। এ ঘটনায় আমাদের আইনজীবিরাও আহত হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের উপর আঘাত নয়, আইনের উপর আঘাত করা হয়েছে। আমরা চাই হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনা হোক। এছাড়া ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের সু-চিকিৎসার জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাড. আব্দুল মালেক বলেন, বিজ্ঞ আদালত শুনানি করেছেন। মইনুল হোসেনের আইনজীবিরা এটি জামিন যোগ্য বলে উপস্থাপন করেছেন। আমরা আদালতে আইন দেখিয়েছি, কোন নারীর প্রতি কটুুক্তি করলে তার ৭ বছরের কারান্ডের বিধান রয়েছে। তাই এটি জামিন যোগ্য নয়। পরে বিজ্ঞ আদালত মইনুল হোসেনের জামিন না মঞ্জুর করেন। সারাদেশের মানুষ যেভাবে নারীর প্রতি অবমাননার জন্য ক্ষিপ্ত হয়েছে তাতে জামিন না মঞ্জুরের বিষয়টি ন্যায় সংগত হয়েছে। এখানে বিএনপি-জামায়াত পন্থী কিছু উৎশৃঙ্খল আইনজীবি এবং তাদের লোকজন হাজিরা শেষে আদালত চত্ত্বরে অরাজকতার সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনায় আমাদের আইনজীবিও আহত হয়েছে।