রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে সবাইকে সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হওয়ার আহবান জানিয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে কাজের মাধ্যমে বৈষম্যহীন, সুখী ও সমৃদ্ধ, বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।পবিত্র ঈদ উল আযহা উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।
রাষ্ট্রপতি বলেন, মহান আল্লাহর প্রতি গভীর আনুগত্য ও সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর পবিত্র ঈদুল আজহা। ‘আজহা’ অর্থ কোরবানি বা উৎসর্গ করা। ঈদুল আজহা উৎসবের সাথে মিশে আছে চরম ত্যাগ ও প্রভুপ্রেমের পরাকাষ্ঠা। মহান আল্লাহর নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আ.)-কে কোরবানি করতে উদ্যত হয়ে হযরত ইব্রাহিম (আ.) আল্লাহর প্রতি অগাধ ভালোবাসা, অবিচল আনুগত্য ও অসীম আত্মত্যাগের যে সুমহান দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে অতুলনীয়।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কোরবানি আমাদের মাঝে আত্মদান ও আত্মত্যাগের মানসিকতা সঞ্চারিত করে, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেয়ার মনোভাব ও সহিষ্ণুতার শিক্ষা দেয়। কোরবানির মর্ম অনুধাবন করে সমাজে শান্তি ও কল্যাণের পথ রচনা করতে আমাদের সংযম ও ত্যাগের মানসিকতায় উজ্জীবিত হতে হবে। ত্যাগের শিক্ষা আমাদের ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হলেই প্রতিষ্ঠিত হবে শান্তি ও সৌহার্দ্য।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত। আবহমানকাল থেকে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ স্বাধীনভাবে জাঁকজমকের সাথে নিজ-নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি পালন করে আসছে। এটা দেশের সম্প্রীতির এক অনুপম ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যকে সমুন্নত রেখে দেশ ও জাতির কল্যাণে তা কাজে লাগাতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ। কোন ধর্মই সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সমর্থন করে না। কোরবানির শিক্ষা ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে প্রতিফলিত হোক।
আবদুল হামিদ বলেন, মহান আল্লাহর নিকট কোরবানি কবুল হওয়ার জন্য শুদ্ধ নিয়ত ও উপার্জন থাকা আবশ্যক। পাশাপাশি সরকার নির্ধারিত স্থানে কোরবানি দেয়া ও কোরবানির বর্জ্য অপসারণে সকলে সচেষ্ট থাকবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘শান্তি, সহমর্মিতা, ত্যাগ ও ভ্রাতৃত্ববোধের শিক্ষা দেয় ঈদুল আজহা। তাই আসুন, আমরা সকলে পবিত্র ঈদুল আজহার মর্মবাণী অন্তরে ধারণ করে নিজ-নিজ অবস্থান থেকে জনকল্যাণমুখী কাজে অংশ নিয়ে বৈষম্যহীন, সুখী, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ে তুলি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হযরত ইব্রাহীম (আ.) মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রিয়বস্তুকে উৎসর্গের মাধ্যমে তাঁর সন্তুষ্টি লাভে যে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন তা বিশ্ববাসীর কাছে চিরকাল অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি বলেন, প্রতি বছর এ উৎসব পালনের মধ্য দিয়ে স্বচ্ছল মুসলমানগণ কোরবানিকৃত পশুর গোশত আত্মীয়-স্বজন ও গরিব-দুঃখীর মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে মানুষে-মানুষে সহমর্মিতা ও সাম্যের বন্ধন প্রতিষ্ঠা করেন।
শেখ হাসিনা বিশ্বাস করেন, প্রতিবারের মতো এবারও ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে সুখ ও আনন্দের বার্তা বয়ে আনবে।
তিনি ঈদুল আজহার দিনে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর উত্তরোত্তর উন্নতি, সমৃদ্ধি ও অব্যাহত শান্তি কামনা করেন।