করোনা নয় বিএনপি নেতাকর্মীদের দমনে মরিয়া সরকার : মির্জা ফখরুল

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: সরকার মহামারি করোনা মোকাবিলা নয়, বরং ‘মিথ্যা’ মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় সরকারের অপরিকল্পিত লকডাউনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় একজন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তার উপস্থিতিতে তার কর্মচারী কর্তৃক একজন দোকান কর্মচারীকে নির্মমভাবে নির্যাতনের প্রতিবাদে স্থানীয় জনসাধারন ব্যাপক বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। জনসাধারণের বিক্ষোভ দমন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেপরোয়া গুলিবর্ষণ ও একজনকে হত্যার পর উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে উল্টো বিএনপি এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অসংখ্য নেতাকর্মীসহ নামে-বেনামে চার হাজার সাধারণ মানুষকে আসামি করে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে প্রমাণ করে সরকার মহামারি করোনা মোকাবিলা নয় বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে রাজনৈতিকভাবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, সালথায় ৮৮ জনের নাম উল্লেখ করে চার হাজার জনকে অজ্ঞাত রেখে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ৮৮ জনের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী। বর্তমানে সালথায় পুলিশি গ্রেপ্তারি অভিযানের কারণে সারা এলাকা মানুষশূন্য হয়ে গেছে। সেখানে ভয়, আতঙ্ক ও বিভিষিকাময় পরিবেশ বিরাজ করছে। গ্রেপ্তারের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিরীহ মানুষকে হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, সালথার ঘটনার সাথে বিএনপি কোনোভাবে জড়িত না থাকলেও কেবলমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে, অথচ গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে-সালথার ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের উসকানি ছিল।

বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকারের উদাসিনতা, ব্যর্থতায় বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় করোনা ভাইরাস মহামারি এখন আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভাইরাসটিতে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা প্রতিদিন জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু সংকটময় পরিস্থিতি সামাল দিতে পূর্বের বছরের মতোই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে সরকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, পরিস্থিতির ভয়াবহতা রোধে সরকার কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই তড়িঘড়ি করে গত ৫ এপ্রিল থেকে ৭ দিনের জন্য দেশে লকডাউন/নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারঘোষিত লকডাউনের বিরুদ্ধে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। প্রকৃত অর্থে লকডাউন বলতে যা বোঝায় রাস্তাঘাটে তার কোনো সামান্যতম চিত্রও পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কেবলমাত্র দেশের বড় বড় মার্কেট, শপিং মল ছাড়া সবকিছু খোলা রাখা হয়েছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীসহ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকান কর্মচারী ও নি¤œ আয়ের মানুষ। ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বাস্তবভিত্তিক ও পরিকল্পিত কোনো পদক্ষেপ নেই। ফলে সরকার লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর করতে ব্যর্থ হচ্ছে। জোরপূর্বক নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে লকডাউন কার্যকর করতে গিয়ে এখন জনগণের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে সরকার। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতাও নেই তাদের। ১২ বছরের অধিক কাল ভয়াবহ দুঃশাসনের জন্য জনগণের নিকট সরকারকে জবাবদিহি করতেই হবে।

সর্বশেষ