রোজিনা ইসলামের জামিনের রায় ‘ফরমায়েসী’: ফখরুল

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: সরকারি নথি ‘চুরির চেষ্টার’ অভিযোগ ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস’ আইনের মামলায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের জামিনের রায় ‘ফরমায়েসী’ বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। রোববার এক সংবাদ সম্মেলন তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

তিনি বলেন, বিচার ব্যবস্থা এখানে কোন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে। যে আইনে তাকে (রোজিনা ইসলাম) গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই আইন কিন্তু জামিনযোগ্য। সেই বৃটিশ আমলের এই আইন তারা নিয়ে এসে প্রয়োগ করেছে সেটা প্রয়োগই হয় নাই। এটাতে জামিনযোগ্য সেকশন আছে। সেখানে তো আপনি জামিন দিচ্ছেন না, একদিন একদিন করে পেছাচ্ছেন।
কার কাছ থেকে নির্দেশ আসে তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে আপনি জামিন দিলেন এই শর্তে যে, বিদেশে যেতে পারবে না এবং ৫ হাজার জামানত। কেনো বিদেশ যেতে পারবে না? এই রায় অবশ্যই ফরমায়েসী রায় বলে আমরা মনে করি।

রোববার ভার্চুয়াল আদালতে শুনানী শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম বাকী বিল্লা পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকা এবং পাসপোর্ট জমা দেওয়ার শর্তে রোজিনা ইসলামের জামিন মঞ্জুর করেন।

সাংবাদিকদের বর্তমান ‘অনৈক্য’র প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি আগেও বলেছি, আজকেও বলছি- আপনাদের দুবর্লতার জন্য এগুলো হচ্ছে। ইউ আর নট ই্উনাটেড। আপনারা আপনাদের নিজেদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারছেন না। আপনারা আগে যেভাবে নিজের স্বার্থের জন্য দাঁড়াতেন সেই স্বার্থের জন্য আজকে আপনারা ইউনাটেডলি দাঁড়াতে পারেন না। কালকে দেখলাম রোজিনার ঘটনায় নেগোসিয়েট করা হচ্ছে। কে নেগোসিয়েট করছেন? আপনাদের ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাহেব। তিনি কী করেছিলেন সাংবাদিক সাগর-রুনির হত্যার আন্দোলনের সময়ে? আন্দোলনের কয়েকদিন পরে উনি এডভাইজার হয়েছিলেন। তারা যদি আজকে আপনার নেগুসিয়েট করে সরকারের সাথে, যারা একেবারে লেজুড়ভিত্তি করে- তাহলে এর চেয়ে রেজাল্ট কি পাবেন?
মির্জা ফখরুল বলেন, এখন বিচার ব্যবস্থা সরকার কি বলে না বলে তার উপর নির্ভর করে-আমরা এই কথা বহুবার বলেছি, যে সরকারের ইঙ্গিতে এখন বিচার ব্যবস্থা চলছে। সরকার পুরোপুরিভাবে এটা নিয়ন্ত্রণ করছে, এটা দলীয়করণ হয়ে গেছে। সেই কারণে আজকে এটা (রায়) হচ্ছে, এই কথাটা এজন্য আসছে এবং আপনাদের এটা নিজেদের অনুধাবন করা উচিত-‘ফর এক্সিসট্যান্স অব এ ফ্রি মিডিয়া’। নির্ভয়ে কাজ করার জন্য আপনাদের ঐক্য প্রয়োজন।

স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত তুলে ধরে ফখরুল বলেন, করোনার টিকা সংগ্রহে সরকার শুরু হতেই দুর্নীতি, অযোগ্যতার কারণে ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে চুক্তিকৃত টিকা না পাওয়ায় এবং অন্যান্য উৎসগুলোর সঙ্গে চুক্তি না করায় টিকা প্রাপ্তি একেবারেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। জনগণের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, খোদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে এর জন্য দায়ী করেছেন। আমরা করোনা সংক্রমণের শুরু থেকেই বিকল্প উৎস সন্ধান এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছিলাম। ভারতের করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ ভাবে খারাপ হওয়া এবং ব্লাক ফাংগাস রোগের মহামারি আকার ধারণ করায় জনগণের মধ্যে প্রচ- হতাশা ও ভীতির সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল জানান, বিএনপি ইতোমধ্যেই ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টের কাছে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে চিঠি পাঠিয়েছে এবং আবারও দুই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার নীতিকে সমর্থন জানাচ্ছে।

শনিবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়াল বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

সর্বশেষ