ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় : আজই আছড়ে পড়বে উপকূলে

ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ আছড়ে পড়ার আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। আশঙ্কার প্রহর গুনতে শুরু করেছে ভারতের গুজরাটের বাসিন্দারা। আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টার মধ্যে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে গুজরাটের পশ্চিম উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়বে ‘বিপর্যয়’। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে পাকিস্তানেও। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ‘বিপর্যয়ে’র অবস্থান ছিল জখৌ বন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমে।

- Advertisement -

ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, নয়াদিল্লি ও উত্তরপ্রদেশে। আগামী চার দিন ওই রাজ্যগুলোতে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। সাথে বইতে পারে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া।

গুজরাট ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী উপকূলবর্তী অঞ্চলের ওপর দিয়ে প্রতি ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে। গুজরাটের কচ্ছ ও সৌরাষ্ট্রে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। গুজরাটের মান্ডবি ও পাকিস্তানের করাচির কাছে জখৌ বন্দরের ওপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় আরো উত্তর দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।

গুজরাট ও পাকিস্তানের পাশাপাশি সতর্কতা জারি করা হয়েছে কেরল, তামিলনাড়ু, রাজস্থান, কর্নাটক, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, গোয়া, দমন ও দিউ, লক্ষদ্বীপ এবং দাদর ও নগরহাভেলিতে। বিপর্যয়ের কারণে কচ্ছ, পোরবন্দর, দ্বারকা, গির, সোমনাথের মতো এলাকায় দু’দিনের জন্য স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। পুণ্যার্থীদের জন্য বন্ধ হয়েছে দেবভূমি দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দিরের দরজা। পোরবন্দর এবং ওখায় পাঁচটি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর পাশাপাশি ভালসুরায় ১৫টি জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দল মোতায়েন করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই গুজরাটের উপকূলবর্তী এলাকা থেকে ৫০ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে বুধবার বিকেলে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল গুজরাট। রিখটার স্কেলে বুধবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল সাড়ে তিন। কম্পনের উৎসস্থল ছিল ভচাউ থেকে পাঁচ কিলোমিটার পশ্চিম দক্ষিণ-পশ্চিমে।

গান্ধিনগরের ইনস্টিটিউট অফ সিসমোলজিক্যাল রিসার্চ জানিয়েছে, বুধবার বিকেল ৫টা ৫ মিনিটের দিকে কচ্ছে ভূমিকম্প হয়। তবে এর ফলে কোনো ক্ষয়ক্ষতির কথা জানা যায়নি। মঙ্গলবার থেকেই মুম্বইয়ে ‘বিপর্যয়ে’র কারণে জলোচ্ছ্বাস দেখা গেছে। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। মৎস্যজীবীদের আপাতত সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ১৯৬৫ সালের পর থেকে জুন মাসে এই নিয়ে গুজরাটে তৃতীয় বার ঘূর্ণিঝড়ের দেখা।

বিপর্যয়ের মোকাবিলায় প্রশাসনের তরফে কী রকম প্রস্তুতি রয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার বৈঠক করেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরে তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেলের সাথেও ফোনে যোগাযোগ করেন।

বিপর্যয় মোকাবিলায় কেন্দ্রের তরফে প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রশাসনের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে গুজরাতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মান্ডবিয়। বিমানবাহিনীর ঘাঁটিতে গিয়ে আপৎকালীন চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়েও খুঁটিনাটি আলোচনা করেন তিনি। ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক ও বীমা সংস্থার কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সিতারামনও।
সূত্র : আনন্দ বাজার

সর্বশেষ