যারাই ক্ষমতায় আসুক, গুম-খুনের বিচার করতে হবে: তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, যে সরকারই নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসবে তাদের গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলনে শহীদ, গুম, খুনের ঘটনার বিচার করতে হবে। আজ রোববার রাজধানীর হোটেল লেক শোরে এক ইফতার মাহফিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

- Advertisement -

গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুম এবং শহীদ পরিবারের সম্মানে আমরা বিএনপি পরিবার এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।তারেক রহমান বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে জয়ী হলে বিগত স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, শহীদ হয়েছেন, তারা যেন ন্যায়বিচার পান, আমরা সেই ব্যবস্থা করব।’ শহীদ পরিবার এবং গুম-খুনের ঘটনায় নির্যাতনের বিচারে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্য থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গুম-খুনের দায়ে শেখ হাসিনাসহ অভিযুক্তদের বিচার না হলে আবারও অন্যায়ের সুযোগ তৈরি হবে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে সব অন্যায়-জুলুমের বিচার নিশ্চিত করা হবে।তারেক রহমান বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির প্রত্যাশা সামনে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা দেশ পরিচালনা করবে। তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যে সরকারই আসুক, যে মানুষগুলো দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের অবশ্যই বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে হবে।

এ সময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তারেক রহমান।এদিন জাতীয় প্রেসক্লাবে এক ইফতার মাহফিলে দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় দ্রুত সময়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে দায়িত্ব দেওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব একটি নির্বাচন দেওয়া উচিত। কারণ, আমরা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে যেটা দেখেছি, নির্বাচন যত দেরি হবে, তত বেশি বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে পরাজিত করার জন্য ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে শুরু করবে। যারা উগ্র, জঙ্গি—তারাও এই সুযোগগুলো নেওয়ার চেষ্টা করবে।’ বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের আয়োজনে ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংস্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা এটুকু বলতে পারি যে, আমরা সংস্কারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা ৩১ দফা অনেক আগেই দিয়েছি, যখন সংস্কারের কথা কেউ বলেনি। সেই সংস্কারগুলোর সঙ্গে আজকের যে প্রস্তাব উঠে আসছে, সেখানে খুব বেশি পার্থক্য দেখছি না।’ তিনি বলেন, ‘পত্রিকার পাতা খুললেই আমরা আজ বিচলিত হয়ে যাই। হত্যা, খুন, ধর্ষণ এমন একটি জায়গায় চলে যাচ্ছে, যে জায়গাটা আমাদের পীড়িত করছে। অন্যদিকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম, বিশেষ করে ছাত্ররা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। আবার দেখছি, যেসব প্রতিষ্ঠান আছে, তারাও তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় বের হয়ে আসছে। আমাদের সকলেরই এই বিষয়ে ধৈর্য ধরার ব্যাপার আছে।’

দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা এখনো অত্যন্ত আন্তরিকভাবে চাচ্ছি, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করে দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের দিকে যাবেন। আমরা তাই মনে করি, যত দ্রুত নির্বাচন হবে, যত দ্রুত জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সংসদে গিয়ে একদিকে দেশ পরিচালনা করবে, অন্যদিকে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় যে সংস্কারগুলো আছে, সেগুলো আমরা সবাই একসঙ্গে করতে পারব।’

ইফতার মাহফিলে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুগান্তর সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ডিইউজের সভাপতি শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, দেশ রূপান্তরের সম্পাদক কামাল উদ্দিন সবুজ, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ।

সর্বশেষ