পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগানোর লক্ষ্যে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। আমাদের সেগুলো অতিক্রম করার উপায় খুঁজে বের করে সামনে এগোতে হবে।’
১৫ বছর পর দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় পরামর্শক বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন আমনা বালোক। অতীতের প্রসঙ্গ টেনে আমনা বালুচ বলেন, ‘বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে যেসব সম্ভাবনা রয়েছে, তা কাজে লাগানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের নিজেরাই বিশাল একটি আঞ্চলিক বাজার। আমাদের উচিত সেটিকে কাজে লাগানো। বারবার সুযোগ হারালে চলবে না।’দুই দেশের বেসরকারি খাতের মধ্যে নিয়মিত ব্যবসায়িক সংযোগ এবং সব পর্যায়ে সফর বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তার কথাও উল্লেখ করেন পাকিস্তানের এই শীর্ষ কূটনীতিক। তিনি জানান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের শীর্ষ ব্যবসায়ী সংগঠন এফপিসিসিআইয়ের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সফর এসে এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দারের আসন্ন বাংলাদেশ সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদারে সহায়তা করবে বলে আশা প্রকাশ করেন আমনা বালুচ।প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, তিনি সব সময় পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) কাঠামোর মধ্য দিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ককে গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে যুব ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম বিনিময় আরও বাড়ানো উচিত, যাতে জনগণের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
ড. ইউনূস আরও বলেন, ‘অনেক দিন আমরা একে অপরের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেছি। সম্পর্ক স্থবির ছিল। এখন আমাদের সেই বাধা অতিক্রম করতে হবে।’
২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশন এবং ডিসেম্বরে কায়রোতে ডি-৮ সম্মেলনের ফাঁকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই বৈঠকগুলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সার্ক, ওআইসি ও ডি-৮-এর মতো আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় মঞ্চগুলোতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ভবিষ্যতেও একসঙ্গে কাজ করে যাবে।
এ সময় এসডিজি বিষয়ক জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোর্শেদ ও বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমেদ মারুফ উপস্থিত ছিলেন।