পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, তাদের সেনাবাহিনী গতকাল বুধবার পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করতে চীনের তৈরি বিমান ব্যবহার করেছিল। খবর সিএনএনের।
পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরের অভ্যন্তরে ‘সন্ত্রাসী’ স্থান বলে দাবি করে ভারত বিমান হামলা চালানোর পর, পাকিস্তান বলেছে, তারা ভারতীয় বিমান- ফ্রান্সের তৈরি তিনটি রাফায়েল, একটি মিগ-২৯ এবং একটি এসইউ-৩০ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।
ভারত পাকিস্তানের দাবির কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি বা কোনো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। সিএনএন এই দাবিগুলো যাচাই করতে পারেনি।
তবে ফ্রান্সের একজন উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, পাকিস্তান একটি রাফায়েল ভূপাতিত করেছে। আরো কোনো রাফায়েল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে কিনা ফ্রান্স সরকার তা নিয়ে তদন্ত করছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার গতকাল বুধবার বলেছেন, “আমাদের যুদ্ধবিমান জে-১০সি তিনটি ফরাসি রাফায়েল ও অন্যান্য যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।” তিনি আরো বলেন, “বুধবার ভোর ৪টার দিকে চীনের রাষ্ট্রদূতসহ চীনের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র দপ্তরে উপস্থিত ছিলেন। ঘটনাটি সম্পর্কে তাদের আপডেট করা হচ্ছিল।”
দারের মন্তব্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার সিএনএনকে বলেন, “তিনি পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত নন এবং পাকিস্তানে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূতের কার্যকলাপ সম্পর্কে ‘কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য’ দেখেননি।”
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মতে, চীন পাকিস্তানের প্রধান অস্ত্র সরবরাহকারী। গত পাঁচ বছরে পাকিস্তানের অস্ত্র আমদানির ৮১ শতাংশ চীনা অস্ত্র।
বুধবার, চীন উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের সামরিক পদক্ষেপের ঘটনায় চীন উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
প্রসঙ্গত, জে-১০সি একটি একক ইঞ্জিনের যুদ্ধবিমান। ২০০০ সালের শুরু দিকে চীনের বিমান বাহিনী তাদের বহরে জে-১০এস যুদ্ধবিমান প্রথম সংযুক্ত করে। তবে, এই যুদ্ধবিমান সর্বশেষ সংস্করণ জে-১০-সি উন্নত অস্ত্র ব্যবস্থার অধিকারী এবং এটি ৪.৫-প্রজন্মের যুদ্ধবিমান হিসেবে তালিকাভুক্ত। এর যুদ্ধ সক্ষমতা চীনের জে-২০ বা যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ এর মতো পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ যুদ্ধবিমানের তুলনায় কম।
যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের সর্বশেষ সংস্করণগুলোও ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান।
জে-১০সি যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি অ্যাভিক চেংডু এয়ারক্রাফট। ভারত-পাকিস্তান হামলার ঘটনার পরে শেনজেনে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে। রিফিনিটিভের তথ্য অনুসারে, বৃহস্পতিবার চীনা কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার আগের মঙ্গলবারের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি বেড়েছে।