spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

বিকেল ৪টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করবে চসিক

spot_img

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : আসন্ন কোরবানির ঈদের বর্জ্য অপসারণে সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। বিগত তিন বছরের সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এবারো ঈদের দিন বিকাল ৪ টার মধ্যে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা নিয়েছে কর্পোরেশন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে গতকাল রোববার দুপুরে এ লক্ষ্যে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী একথা জানান। তিনি বলেন, কোরবানির ঈদের দিন নগরে পশু জবাইয়ের জন্য ৩৭০টি স্থান নির্ধারণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ দিন বিকেল ৪টার মধ্যে নগরে জবাই করা পশুর বর্জ্য অপসারণে ব্যাপক কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি কোরবানির পশু জবাইয়ের পরপরই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে দায়িত্বে থাকবেন চসিকের স্থায়ী-অস্থায়ী ৫ হাজার পরিচ্ছন্নকর্মী।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরগণ বর্জ্য অপসারণে তাদের মতামত, লোকবল ও গাড়ির চাহিদা ও পরিকল্পনার কথা সভায় তুলে ধরেন। ৪১টি ওয়ার্ডে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিচ্ছন্ন বিভাগের সুপারভাইজাররা বর্জ্য অপসারণে তাদের কাজের সুবিধার্থে প্রয়োজনীয় ওয়াকিটকি, গাড়ি, টমটম গাড়ি, বেলছা, ঝাড়ু, হুইল ভেরু’র চাহিদার কথা উল্লেখ করে তা সরবরাহের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন। এ সময় কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, পরিচ্ছন্ন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্পোরেশনের সামর্থ্যরে মধ্যে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে উল্লেখ করেন।
সভায় জানানো হয়, সিটি কর্পোরেশন এবার ৪টি জোনে বিভক্ত হয়ে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করবে। আর এ কাজের জন্য কর্পোরেশন ৫ হাজার জন শ্রমিক, ৩৫০ টি গাড়ি, পশু জবাইকৃত স্থানে বিøচিং পাওডার ছিটানোর ব্যবস্থা করেছে। এর মধ্যে সরু রাস্তা ও গলি থেকে বর্জ্য অপসারণের জন্য টমটম, হুইল ভেরু ও বর্জ্য অপসারণ কাজ তদারকিতে নিয়োজিত পরিচ্ছন্ন বিভাগের সুপারভাইজারদের জন্য সিএনজিচালিত ট্যাক্সির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে নাগরিকদের সহযোগিতা চেয়ে চট্টগ্রামের স্থানীয় পত্রিকাগুলো বিজ্ঞাপন প্রচার, প্রতিটি ওয়ার্ডের মসজিদগুলোতে গত শুক্রবার জুমার খুতবায় ইমাম সাহেবের মাধ্যমে প্রচার, হ্যান্ড বিল ও লিফলেট বিলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এবারো বর্জ্য অপসারণে কোন ওয়ার্ডে যত ট্রিপ গাড়ি দেওয়া প্রয়োজন তত দেয়া হবে জানানো হয়েছে। এ জন্য দামপাড়াস্থ চসিক কার্যালয়ে ১টি কন্ট্রোলরুম খোলা সহ চসিকের প্রকৌশল বিভাগের যান্ত্রিক শাখা পরিবহন পুলকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এদিকে, বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম নিশ্চিত কল্পে কোরবানি ঈদের দিন সকল স্থায়ী-অস্থায়ী ৫ হাজার পরিচ্ছন্ন কর্মীর ছুটি বাতিল করেছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও কোরবানির ঈদের দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে পুরো নগরে জবাইকৃত পশুর বর্জ্য অপসারণ এবং ঈদের পরের দিন শেষ রাত পর্যন্ত বর্জ্য অপসারণের লক্ষে ৪১টি ওয়ার্ডকে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব, পশ্চিম-৪টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। প্রত্যেক জোন তদারকির জন্য একটি করে ‘উপ-কমিটি’ ও ৪ সদস্য বিশিষ্ট ১টি কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি ডোর টু ডোর পদ্ধতিতে বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষে সমস্ত কার্যক্রম ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরা তদারকি করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন বলেন, কোরবানির ঈদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সামনে রেখে নানান উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পশু জবাইয়ের জন্য নগরের ৪১ ওয়ার্ডের ৩৭০ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই সংক্রান্ত তথ্যসহ ৪ লাখ ১০ হাজার লিফলেট ও ২০ হাজার ৫০০ পোস্টার এবং ৭৬ হাজার ২৩১টি ব্যানার ৪১ ওয়ার্ডে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন পশু কোরবানির নির্বাচিত স্থানে পানির সরবরাহ, সেবাপ্রাপ্তির বসার স্থান, তাবু টাঙানো এবং ব্লিচিং পাউডারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নির্ধারিত স্থান ছাড়া উন্মুক্ত স্থান বা সড়কে পশু জবাই করা যাবে না। তবে কেউ চাইলে তার বাড়ি বা বসার আঙিনায় পশু কোরবানি দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্দেশনা অনুযায়ী ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন মোট ২ দিনে প্রতি ওয়ার্ডে টমটম আবর্জনাবাহী গাড়ি, পে লোডার, ট্রাক্টর ওয়াগনসহ ২৪১টি গাড়ি ও অবশিষ্ট ১০টি গাড়ি দামপাড়া কন্ট্রোল রুমে রিজার্ভ থাকবে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ