সব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে: মির্জা ফখরুল

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ৩ বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর সিলেট, ২৬ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ ও ২৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে এই সমাবেশ হবে।

শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া বৈঠকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিয়ে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন।

বিকাল ৫টা থেকে আড়াই ঘণ্টাব্যাপী স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। লন্ডন থেকে বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান স্কাইপে যুক্ত ছিলেন।

বৈঠক শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, দেখবেন যে সরকারের স্বরও কমে গেছে আজকাল। যেভাবে জোর গলায় কথা বলতো এখন তারা নিজেরাই ধরা পড়ে গেছে। আমাদের তো অপেক্ষা করতে হয়নি। তাদের লোকেরাই সব ধরিয়ে দিচ্ছে, ধরা পড়ছে তারা- এখন যেন স্বরটা কমে আসছে।

তিনি বলেন, একটা কথা তাদের (সরকার) বলতে চাই, গলাবাজী না করে রাষ্ট্র পরিচালনায় ব্যর্থ হচ্ছেন- এই কারণে পদত্যাগ করেন। দয়া করে নতুন করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে, নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা করে জনগণকে রেহাই দেন, জনগণকে স্বস্তি দেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, গোটা দেশে এখন একটাই মাত্র আলোচনা- সেটা হচ্ছে ক্যাসিনো-জুয়া। সারা দেশে বলা হচ্ছে যে, ঢাকার বাইরেও এই জুয়া চলছে। এই সরকারের আমলে এটা প্রচণ্ড রকমে বেড়ে গেছে। বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণটা হচ্ছে তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই কোথাও।

তিনি বলেন, এখন ২৯ ডিসেম্বর যাদের ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করেছে তাদের বলার কিছু নেই, তাদের নিয়ন্ত্রণই করতে পারছে না। যে কারণে এই পরিস্থিতিগুলো এরাইজ করেছে। না পারছে নিজের দল, না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, না অন্য কিছু নিয়ন্ত্রণ নেই। অর্থাৎ সব নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এই সরকারের কোনো লেজিটিমেট রাইট নেই ক্ষমতায় টিকে থাকার। তারা সচেতনভাবে এটাকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। ব্যর্থ রাষ্ট্রের কারণেই কিন্তু সমস্ত অরগানগুলো ফেল করে যাচ্ছে, ভেঙে পড়ছে, কাজ করছে না।

তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে জোটের অন্যতম শরিক রাশেদ খান মেনন বলেছেন যে, দুর্নীতি এখন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে। অর্থাৎ দুর্নীতি এখন একেবারে উপর থেকে শুরু করে নিচে পর্যন্ত ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার, ওই চকিদার পর্যন্ত দুর্নীতি হচ্ছে একেবারে ফ্রি- যা খুশি করতে পার, কেউ কিছু দেখবে না। দেখার কেউ নেই। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার তার পরিবারের সদস্যরা দেখা করতে গিয়েছিলেন হাসপাতালে। সেখান থেকে বেরিয়ে তার বোন বলেছেন যে, তিনি (খালেদা জিয়া) অত্যন্ত অসুস্থ, আগের চেয়ে অনেক বেশি অসুস্থ। উনি শুকিয়ে গেছেন এবং তিনি এখন নিজে খেতেও পারছেন না, তাকে খাইয়ে দিতে হচ্ছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা মনে করি যে, এই ১৭ মাসে যে সবচেয়ে খারাপ সময় শারীরিক দিক থেকে যাচ্ছে। আমরা বারবার বলেছি যে, তার চিকিৎসার জন্য তাকে মুক্তি দেয়া হোক। তিনি যেখানে ভালো চিকিৎসা করতে চাইবে সেখানেই তিনি করবেন। সেখানে সরকার কোনো কথাই শুনছে না। আমরা উচ্চ আদালতে গিয়েছিলাম। সেটাকে পূর্ণাঙ্গ কোর্টে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি যে, এগুলো তার যে জামিন যেটা তার প্রাপ্য যেটাকে বিলম্বিত করাই হচ্ছে। জেনে শুনে সরকার এটা করছে। উদ্দেশ্যটা হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে দূরে রাখা এবং একই সঙ্গে ধীরে ধীরে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া। আমরা অবিলম্বে তার মুক্তি চাই, আইনগতভাবে চাই, জামিনের মাধ্যমে চাই।

উচ্চ আদালতের অবকাশকালীন ছুটির পর খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ের আইনি প্রক্রিয়া আবার শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ছাত্র দলের যে কাউন্সিল অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়েছেন যে, তার নেতৃত্বে ও ব্যাপক প্রচেষ্টায় এটা সফল হয়েছে। একই সঙ্গে আমরা মির্জা আব্বাসকেও ধন্যবাদ জানিয়েছি যে, তার বাসায় এই কাউন্সিলটা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।

দলের ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদুর টকশোতে একটি বক্তব্যকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতে হামলার ঘটনার নিন্দা জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, জনাব শামসুজ্জামান দুদু টকশোতে সম্ববত কিছু কথা বলেছেন, যে কথাগুলো আমরা দেখেছি যে, তার প্রত্যেকটা কথাই পার্লামেন্টারি লেঙ্গুয়েজে কথা বলেছেন। সেখানে কোনো ধরনের হুমকি-ধামকি, রাষ্ট্রদ্রোহী কিছু আছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়নি।

সর্বশেষ