প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না- দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের রাস্তায় নামতে হবে, আন্দোলন করতে হবে এবং এই দানব সরকারকে বাধ্য করতে হবে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদের পরাজিত করতে হবে।
জোটনিরপেক্ষ সম্মেলনে (ন্যাম) প্রধানমন্ত্রী কী কী অর্জন- তা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন মির্জা ফখরুল। মঙ্গলবার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে যুবদল আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
ক্যাসিনোর ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা অবশ্যই আইওয়াশ। হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে এখন ছোটখাটো কয়েকজনকে ধরে বলছেন আমরা শুদ্ধি অভিযান করছি। এ থেকে প্রমাণিত হয়েছে তারা শুদ্ধ নয়। তাদের শুদ্ধ হওয়ার প্রয়োজন আছে। আজকে গোটা বাংলাদেশকে তারা অশুদ্ধ করে ফেলেছে। লুট হচ্ছে, ডাকাতি হচ্ছে. কোথাও বাছ-বিচার নেই। দুর্নীতি এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে যে রূপপুরের একটি প্রকল্পে ৭৭ শতাংশই লুট হচ্ছে। আর ২৩ শতাংশ কাজ হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে গোটা বাংলাদেশকে তারা অপবিত্র করে ফেলেছে। গোটা বাংলাদেশকে তারা অসুস্থ করে ফেলেছে। আজকের সমাজের দিকে তাকিয়ে দেখুন ধর্ষণ হচ্ছে, নারীর শ্লীলতাহানি হচ্ছে, বাবা ছেলেকে মারছে, লুট হচ্ছে, খুন-গুম হচ্ছে কোথাও কোনো জায়গায় শান্তি নেই।
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পরিচালক মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছেন দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ জন্য তাদের জবাবদিহি করতে হবে। একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য নিয়ে তারা জাতির সঙ্গে মিথ্যাচার করছেন। একজন আবার বলেছেন, হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে। আমরা জানতে চাই তিনি কি অবস্থায় আছেন- তা পরিষ্কার করে জানান।
তিনি বলেন, পরিষ্কার বলতে চাই- খালেদা জিয়া কোনো মামলায় সাজা পাননি। আপনাদের সাজানো মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়েছেন। অবিলম্বে তাকে মুক্তি দিতে হবে। তার চিকিৎসা কীভাবে করবেন সেটার সিদ্ধান্ত তিনি নেবেন। আমরা তার প্রাপ্য জামিন চাই।
যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস-চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আব্দুস সালাম আজাদ,বিএনপির সহ-যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সাবেক যুবদল নেতা আলবার্ট পি কস্তা, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন, উত্তরের সিনিয়র যুগ্ম-সম্পাদক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, মাহবুবুল হাসান পিংকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী ন্যাম সম্মেলন থেকে ফিরে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন জানিয়ে ফখরুল বলেন, এখন আর নন-অ্যালায়েন্স বলতে কিছু নেই। সবাই অ্যালায়েন্স। সেখানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী কোনো বক্তব্য দিয়েছেন কি-না জানি না। তার কোনো বক্তব্য আমরা শুনিনি। তবে তিনি বলেছেন, তিনি (প্রধানমন্ত্রী) অনেকগুলো বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকের ফলে আমরা কি অর্জন করলাম তাও জানি না। আমরা এখন পর্যন্ত রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারিনি। ভারতের আসামে ১৯ লাখ মানুষের তালিকা করা হয়েছে। সেখানকার নেতারা বলছেন, এরা সবাই বাংলাদেশি, তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে। আমরা এটা নিয়ে চিন্তিত। পত্রিকায় দেখলাম ব্যাঙ্গালোরে ১০০ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করছে। আমি বুঝি না এ ব্যাপারে আমাদের সরকার কোনোরকম কথা বলছে না।
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি ভোটারবিহীন নির্বাচন করে টিকে থাকতে পারেনি। তার এ বক্তব্যের জবাবে বলতে চাই ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন করেছিলাম কেয়ারটেকার সরকার গঠনের জন্য। দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটি আনার জন্য। আর আপনারা নির্বাচন করেছেন ক্ষমতায় আরও ৫ বছর টিকে থাকার জন্য। আর আপনি বলেছেন, জনগণ আপনাদের সঙ্গে আছে, তাহলে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে একটা নির্বাচন দেন, দেখেন জনগণ কার সঙ্গে আছে। ২৯ ডিসেম্বরতো সব লুট করে নিয়েছেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই যে দানব সরকার তার বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলি। সূত্র:: দৈনিক যুগান্তর