আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আগামীকাল বুধবার (২৩ মে) থেকে অনির্দিষ্টকালের অবরোধের ডাক দেয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়।
গত ২৮ মার্চ চবি উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন বরাবরে সেশনজট নিরসন, শাটলট্রেনের বগি বৃদ্ধি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বিএনপি-জামায়াতের লোকদের অপসারণ, সম্প্রতি জামায়াত-বিএনপি’র নিয়োগকৃত লোকদের চাকরিচ্যুতিসহ কিছু নৈতিক ও ছাত্রঅধিকারের বিষয় উল্লেখ করে আট দফা দাবি জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে স্মারকলিপি দেয়া হয়।
গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আন্দোলনকারীরা দাবি করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবিগুলো অবিলম্বে বাস্তবায়নের কথা দেয়। কিন্তু এই কথা না রেখে উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে। শুধু তাই নয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তিনি বিএনপি-জামায়াতের দোসরদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ সকল দায়িত্ব অর্পনের মধ্য দিয়ে জননেত্রীর সাথে বেঈমানি করেছেন।
‘দাবির বিষয়ে প্রশাসনের আশ্বাসের ১ মাস ২৪ দিন অতিবাহিত হলেও দাবি অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে সেশনজট নিরসনের উদ্যোগ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আজ পর্যন্ত কোন বিভাগকে একটি চিঠিও দেয়নি। শাটলট্রেনের বগি বৃদ্ধির জন্য রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে নূন্যতম কোন বৈঠকের আয়োজন করেনি। হাজার হাজার শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা যাতায়াত ভাতা আদায় করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেই যাচ্ছে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ক্যাম্পাসে ছিনতাই বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে দাবি জানানো হলেওআজ পর্যন্ত এ কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে ছিনতাইকারীদের আখড়ায়। গত ২০ মে দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ ‘নড়েবড়ে চবির নিরাপত্তা ব্যবস্থা’ শিরোনামে চবির নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে সংবাদও পরিবেশন হয়।
ক্যাম্পাসে মাদক বন্ধের দাবির বিষয়ে কোন উদ্যোগ প্রশাসন ১ মাস ২০ দিনেও নেয়নি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিলেও অজানা কারণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব।
‘শুধু তাই নয়, জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সময়ের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে জামায়াত-বিএনপির লোকদের পদায়ন করা হয়েছে। আমরা তাদের অপসারণের দাবি জানিয়েছিলাম। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাতে কর্ণপাত করেনি এতোদিনেও। ’
এতে আরো বলা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমান প্রশাসনের বিগত তিন বছরের মেয়াদে নিয়ম বহির্ভূতভাবে, যোগ্যতা না থাকার পরও শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী জামায়াত-বিএনপির ক্যাডারদের। আমরা তাদের নিয়োগ বাতিল করা দাবি জানিয়েছিলাম। জঙ্গীমাতা বেগম খালেদা জিয়ার নামে থাকা স্থাপনার নাম বাতিলের দাবি জানিয়েছিলাম।’
২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক বাসে বোমা হামলাকারী শিবির ক্যাডারদের চাকরিচ্যুত করা ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৃহৎ পরিসরে একক ভাস্কর্য নির্মাণ করার দাবি জানালেও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয় বিবৃতিতে।