ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিস্ফোরণের ঘটনায় আব্দুস সালাম হৃদয় নামে একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ২টার দিকে জাহাজের ইঞ্জিনরুম থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত হৃদয় জাহাজের গ্রিজারম্যান ছিলেন।
এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনায় নদীতে পড়ে থাকা ভগ্নাংশ উদ্ধারে বিআইডব্লিটিএ’র জাহাজ হামজাকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় পদ্মা কোম্পানী চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
কোম্পানীর ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মাসুদুর রহমান জানান, কোম্পানীর অপারেশন ম্যানেজারকে প্রধান করে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার থেকে তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। আগামী ৩ দিনের মধ্যে তারা তদন্ত রিপোর্ট দিবেন। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এক জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তার দাবী জাহাজের মালিক পক্ষ ঘটনার পর থেকেই সার্বিক সহযোগীতা করছে। উদ্ধার কাজ অব্যাহত আছে।
ঝালকাঠি পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল জানান, সর্বশেষ জাহাজের ইঞ্জিন রুম থেকে যে মৃতদেহ পাওয়া গেছে তাকে সনাক্ত করেছেন জাহাজের বাবুর্চী বেলায়েত হোসেন। দুর্ঘটনার পর আহত বাবুর্চী বেলায়েতকে পুলিশের সহায়তায় চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতদের স্বজনরা কোন অভিযোগ করেনি।
এদিকে নিখোঁজদের স্বজনরা ‘সাগর নন্দিনী-২’র মালিক পক্ষ এবং পদ্মা কোম্পানীর বিরুদ্ধে উদ্ধার অভিযান বন্ধ রেখে তেল সরিয়ে নেয়ার কাজে ব্যাস্ত থাকার অভিযোগ করেছেন। নদীর ভিতরে বিস্ফোরণে বিচ্ছিন্ন জাহাজের পিছন অংশের সন্ধান পাওয়া গেছে। তবে কোস্টগার্ড এবং ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পানির ভিতরে সন্ধান পাওয়া জাহাজের ঐ অংশে প্রবেশ করা যাচ্ছেনা। তাই উদ্ধার অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বজনদের ধারণা বিস্ফোরণের সময় যারা বেড়িয়ে যেতে পারেনি তাদের মৃতদেহ ঐ অংশের নিচে চাপা পরে আছে।
বিস্ফোরণের ঘটনায় নিখোঁজ ৪ জনের পরিচয় মিলেছে। ঘটনার পর দিন রোববার নিখোঁজদের স্বজনরা ঘটনাস্থলে এসে কোন সন্ধান না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাদের অভিযোগ, জাহাজ কর্তৃপক্ষের উদ্ধার অভিযানে কোন তৎপরতা নেই। নিখোঁজদের উদ্ধার অভিযানের চেষ্টা করা হচ্ছেনা। বরং কর্তৃপক্ষ জাহাজটিকে রক্ষায় জাহাজের তেল সরিয়ে নিতে ব্যাস্ত আছে।
নিখোঁজ কর্মচারীদের মধ্যে যাদের পরিচয় মিলেছে তারা হলেন- চাঁদপুর জেলার সুপার ভাইজার মাসুদুর রহমান বেলাল, বাখেরগঞ্জের নলুয়া ইউনিয়নের মাস্টার রুহুল আমিন খান (৪৫), পিরোজপুরের বুড়ির চর গ্রামের ড্রাইভার আকরাম হোসেন সরোয়ার (৪৫), বরিশাল বাখেরগঞ্জের পাদরী শিবপুর গ্রামের রিফাত হোসেন (১৯)।