মো.মুক্তার হোসেন বাবু : উপকূলের দিকে ক্রমশ অগ্রসর হওয়া ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দরে ‘অ্যালার্ট-থ্রি’ অর্থাৎ বিপৎসংকেত জারি করা হয়েছে। বন্দরের জেটিতে অবস্থানরত সব জাহাজকে গভীর সাগরে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। এদিকে ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতের আশঙ্কায় চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি থেকে ১৬টি জাহাজ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বহির্নোঙ্গর থেকে ৪৯টি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেটি থেকে সর্বশেষ কনটেইনার পরিবহন চলছিল, সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আসা-যাওয়া, কনটেইনারসহ পণ্য ওঠানামা ও খালাসসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে আবহাওয়া অধিদফতর ছয় নম্বর বিপৎসংকেত জারির পর গত শনিবার রাতে নিজস্ব ‘অ্যালার্ট-থ্রি’ অর্থাৎ বিপৎ সংকেত জারি করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এরপর নয় নম্বর মহাবিপৎসংকেত জারির পর বন্দর তাদের নিজস্ব ‘অ্যালার্ট-ফোর’ জারি করেছে।
গত শনিবার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম বন্দরের জারি করা বিশেষ নির্দেশনায় জেটিতে থাকা সব জাহাজকে জোয়ার শুরুর সঙ্গে সঙ্গে জেটি ত্যাগের কথা বলা হয়। বহির্নোঙ্গরে থাকা সব জাহাজকে রাত থেকেই গভীর সমুদ্রের উদ্দেশে রওনা দিতে বলা হয়। বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ডে কনটেইনার পরিবহন ছাড়া বাকি সব ধরনের কার্যক্রম শনিবার রাতেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বন্দর চ্যানেল দিয়ে ছোট ছোট নৌযানগুলোকে তাদের চলাচল বন্ধ করে অভ্যন্তরীণ নৌবন্দরে ফেরত যেতে বলা হয়। এছাড়া একই নির্দেশনায় বন্দরের জেটি ও ইয়ার্ডে থাকা সকল ক্রেন, পল্টুন, কনটেইনারসহ সকল সরঞ্জাম সুরক্ষার কথা বলা হয়। বন্দর কর্তৃপক্ষ রাতে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করে, যেটি ২৪ ঘণ্টা সচল থাকবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, রাতে জোয়ার না থাকায় আজ রোববার (গতকাল) সকালে জেটি থেকে ১৬টি জাহাজকে শাহ আমানত সেতুর দিকে কর্ণফুলী নদীর উজানে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহির্নোঙ্গরে ৪৯টি জাহাজ ছিল। সাগর উত্তাল থাকায় গত শনিবার এমনিতেও সেখানে পণ্য ওঠানামা হয়নি। রাতেই সেগুলোকে গভীর সমুদ্রে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর এখন একেবারে জাহাজশূন্য আছে। জেটিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তাকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। আমাদের ইক্যুইপমেন্টগুলো সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সাগর বিক্ষুব্ধ আছে। কর্ণফুলী নদীতে লাইটারেজ জাহাজ চলাচল ও ঘাটে পণ্য খালাস পুরোপুরি বন্ধ আছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলো নদীতে অবস্থান করছে। সাগরে অবস্থানরত নৌকা-ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর।