spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

ভূমিকম্প: ব্যাংককে কেন একটিমাত্র ভবন ধসে পড়ল, বাকিগুলো কেন অক্ষত

নিজস্ব প্রতিবেদক
spot_img

গত শুক্রবার ভয়াবহ ভূমিকম্পের সময় ব্যাংককের উঁচু ভবনগুলো বিপজ্জনকভাবে দুলতে দেখা গেছে, এমনকি ছাদের সুইমিং পুল থেকে পানি ছিটকে পড়তে দেখা গেছে। তবে চাটুহাক জেলার অডিটর–জেনারেলের অফিসের নির্মাণাধীন সদর দপ্তরটিই একমাত্র বহুতল ভবন যা ধসে পড়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেন শুধু এই ভবনটিই ধসে পড়ল? বাকিগুলো কেন অক্ষত?

- Advertisement -

ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের ভূমিকম্প প্রকৌশলের সিনিয়র লেকচারার ড. ক্রিশ্চিয়ান মালাগা-চুকুইটেপের মতে, ২০০৯ সালের আগে ব্যাংককে ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণের জন্য কোনো বিস্তৃত সুরক্ষা মান ছিল না। এর ফলে, পুরোনো ভবনগুলো বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণ করা ব্যয়বহুল হতে পারে এবং মিয়ানমারের মতো থাইল্যান্ডে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয় না। তাই ভবন নির্মাণের সময় ভূমিকম্প ঝুঁকি বিবেচনা না করাটা অস্বাভাবিক নয়।

ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য প্রকৌশলের অধ্যাপক ড. এমিলি সো উল্লেখ করেছেন, ক্যালিফোর্নিয়া, পশ্চিম কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডের মতো জায়গায় পুরোনো ভবনগুলোকে ভূমিকম্পসহ করতে তুলতে পরে শক্তিশালী করা হয়েছে।

স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব থাইল্যান্ডের সভাপতি অধ্যাপক অমর পিমার্নমাস বিবিসিকে বলেন, থাইল্যান্ডে ৪৩টি প্রদেশে ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবন নির্মাণের নিয়ম থাকলেও আনুমানিক ১০ শতাংশেরও কম ভবন ভূমিকম্প প্রতিরোধী।

তবে, ধসে পড়া নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবনটি নতুন ছিল এবং ভূমিকম্পের সময় এটি নির্মাণাধীন ছিল। তাই নতুন ভবন নির্মাণের নিয়ম এখানে প্রযোজ্য হওয়ার কথা।

ড. পিমার্নমাস বলেন, ব্যাংককের নরম মাটিও ভবন ধসের কারণ হতে পারে। কারণ নরম মাটি ভূকম্পনের গতি তিন থেকে চার গুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

মিয়ানমারে ভূমিকম্পে প্রাণহানি ১৬০০ ছাড়ালমিয়ানমারে ভূমিকম্পে প্রাণহানি ১৬০০ ছাড়াল
তিনি আরও বলেন, ‘উপকরণ (কংক্রিট এবং রিইনফোর্সমেন্ট)–এর গুণমান এবং কাঠামোগত ব্যবস্থায় কিছু অনিয়মও থাকতে পারে। এগুলো বিস্তারিতভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন।’

ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে ড. মালাগা-চুকুইটেপে জানান, এই ভবন নির্মাণে ‘ফ্ল্যাট স্ল্যাব’ নির্মাণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এই পদ্ধতি কিন্তু ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় ব্যবহার নিরুৎসাহিত করা হয়।

ভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে ধসে পড়ল ৩০ তলা ভবন, ৪৩ নির্মাণশ্রমিক নিখোঁজভূমিকম্পে থাইল্যান্ডে ধসে পড়ল ৩০ তলা ভবন, ৪৩ নির্মাণশ্রমিক নিখোঁজ

তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘ফ্ল্যাট স্ল্যাব’ হলো এমন একটি নির্মাণ পদ্ধতি যেখানে ফ্লোরগুলো বিম ব্যবহার না করে সরাসরি কলামের ওপর স্থাপন করা হয়। কল্পনা করুন, একটি টেবিল শুধু পায়ের ওপর দাঁড়িয়ে আছে, এর নিচে কোনো অতিরিক্ত অনুভূমিক সমর্থন নেই। এই নকশার খরচ এবং স্থাপত্যগত সুবিধা থাকলেও, ভূমিকম্পের সময় এটি সুরক্ষা দেয় না, প্রায়শই ভঙ্গুর এবং হঠাৎ (প্রায় বিস্ফোরণ) ভেঙে পড়ে।

ফলে ধারণা করা হচ্ছে, ব্যাংককে বহুতল ভবনটি ধসের পেছনে নির্মাণ ত্রুটি এবং মাটির প্রকৃতি দুটিই ভূমিকা রেখেছে।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ