spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

জলাবদ্ধতা নিরসনে মহানগরে ২১ খাল পুনরুদ্ধারে মাঠে নামছে চসিক

মো.মোক্তার হোসেন বাবু
spot_img

মো.মোক্তার হোসেন বাবু:: চট্টগ্রাম মহানগরের ৩৬টি খাল নিয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনের একটি মেগা প্রকল্প নিয়েছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। যা বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কন্সট্রাকশন ব্রিগেড। ইতোমধ্যে প্রকল্পটির ৮৫ শতাংশ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে ৩৬ খাল ঘিরে নেওয়া জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের বাইরে আরও ২১টি খাল রয়েছে। এসব খালের পুনরুদ্ধার ও উন্নয়ন ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

- Advertisement -

জানা গেছে, চট্টগ্রাম মহানগরের ২১ খালের বিষয়টি প্রথম আলোচনায় আসে ২০১৭ সালে। ওই বছরের ৫ আগস্ট একনেকে অনুমোদন পায় ৩৬ খালকে ঘিরে চউক’র গৃহীত ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প। প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় ওয়াসার মাস্টার প্ল্যানের ভিত্তিতে। ওয়াসার মাস্টার প্ল্যানে নগরে ৫৭ খাল থাকলেও সিডিএ’র প্রকল্পটি ৩৬ খাল ঘিরে। এ প্রকল্পের বাইরে ২১ খাল থেকে যায়। পরবর্তীতে ২০২২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম এবং ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের গৃহীত কার্যক্রমের পর্যালোচনা সভায় ২১ খাল নিয়ে চসিকের প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়।

জানা গেছে, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় ৩৬টি খালের সংস্কার সম্প্রসারণ কাজ ২০২৬ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলেই জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি মিলবে বলে জানায় সিডিএ। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। ৩৬ খালের সঙ্গে সংযুক্ত আরও ২১টি খাল আছে। এ খালগুলো সংস্কার, সম্প্রসারণ না হলে জলাবদ্ধতা থেকে শতভাগ মুক্তি পাচ্ছে না নগরবাসী।

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, নগরে মোট ৫৭টি খাল রয়েছে। চউক’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে ৫৭ খাল থেকে ৩৬ খাল নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আরও ২১ খাল রয়েছে। যেগুলো নিয়ে চউক’র কোনো প্রকল্প নেই। মেয়র আরও বলেন, চউক’র পরিকল্পনার বাইরে থাকা খালের সংস্কার ও উন্নয়ন ছাড়া তো জলাবদ্ধতা শতভাগ নিরসন সম্ভব না। তাই এসব খাল নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে ২১ খাল ছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. ফেরদৌস আহমেদ বলেন, আমরা চউক’র প্রকল্পের অধীনে ৩৬টি খালের কাজ করছি। আমাদের প্রকল্পের বাইরে আরও ২১ খাল রয়েছে। জলাবদ্ধতার শতভাগ সুফল পেতে হলে সব খালের সংস্কার করতে হবে। অন্যথায় জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের শতভাগ সুফল মিলবে না।

এদিকে চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের বাইরে থাকা এই ২১ খাল পুনরুদ্ধার ও উন্নয়নে কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। প্রকল্প বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক সমীক্ষা শুরু করেছে নেদারল্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠান। চলতি বছরের মধ্যে সমীক্ষা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়েও কাজ করছে। এর আগে গত জুনের মাঝামাঝিতে চসিকের পক্ষ থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও ২১ খাল নিয়ে প্রাক-প্রাথমিক সমীক্ষা করার জন্য নেদারল্যান্ড এম্বেসির কাছে একটি চিঠি দেয় চসিক। এই চিঠির পর সম্প্রতি প্রাক-প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে বলে জানান চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম।

এর আগে, ২০২২ সালের আগস্টে ২১ খালের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি (সমীক্ষা) প্রণয়নের লক্ষ্যে কনসালটেন্ট ফার্ম নিয়োগের জন্য দরপত্র আহ্বান করে চসিক। প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রণয়নের কাজ পায় ওয়াসু ইঞ্জিনিয়ারস লিমিটেড। ৩৪ লাখ টাকায় প্রতিষ্ঠানটি ফিজিবিলিটি স্ট্যাডি প্রণয়নের কথা থাকলেও পরবর্তীতে কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায় প্রতিষ্ঠানটি।অন্যদিকে, ৬৫ লাখ টাকায় দরপত্রে অংশগ্রহণ করে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সিইজিআইএসও এ কাজ করতে অস্বীকৃতি জানায়। দরপত্রে অংশগ্রহণ করেও ‘টাকা কম হওয়ায়’ চলতি বছরের ২০২৪ সালের মার্চে এই কাজ করতে প্রতিষ্ঠান দু’টি অস্বীকৃতি জানায় বলে জানান চসিকের সংশ্লিষ্টরা। ফলে অর্ধ যুগ ধরে আলোচনায় থাকা চসিকের এ প্রকল্প ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। ডা. শাহাদাত হোসেন মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর ২১ খাল নিয়ে প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নেন।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ