‘সরকারের পতনের মহালগ্ন এসে গেছে’ রুহুল কবির রিজভী

 

- Advertisement -

সরকারের পতনের মহালগ্ন এসে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সরকার পতনের মহালগ্ন এসে গেছে। আর কোনো উপায় নেই। সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তেই হবে।
রিজভী আহমেদ বলেন, পরশু দিনের প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যে দাপট থাকলেও চেহারায় ছিল অন্যমনস্কতা ও দুঃশ্চিন্তার ছাপ। তবে আমরা সুস্পষ্টভাবে আবার জানিয়ে রাখি, দাপট দেখিয়ে গণদাবী উপেক্ষা করলে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হবে।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর একটা সমাবেশকে কেন্দ্র করে সারাদেশে যে দমন পিড়ন শুরু করেছে সরকার তার কারণ কারো বুঝতে বাকি থাকার কথা না। দেশের ভোটারদের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভিত্তিতে ভাগ করে ফায়দা লুটার অভিনব চক্রান্ত শুরু করেছে আওয়ামী মন্ত্রী ও নেতারা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যের নামে সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত হচ্ছে, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। আকস্মিকভাবে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের আওয়ামী নেতার বক্তব্য অশুভ চক্রান্তের ইঙ্গিতবাহী। আবহমান বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিনষ্টকরে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করতে নেমে পড়েছেন ওবায়দুল কাদের সাহেবরা। জনসমাজে সাম্প্রদায়িক ঐক্য যখন অটুটবন্ধনে গ্রথিত, তখন ওবায়দুল কাদের সাহেবের আচমকা সাম্প্রদায়িকতা টেনে আনা দেশের মানুষকে পরিকল্পিত বিভাজনের দিকে ঠেলে দেয়ার এক গভীর চক্রান্ত। শান্তি ও সহবস্থানের মধ্য দিয়ে ধর্ম, বর্ণ, ভাষা নির্বিশেষে জণগনের নির্বিঘেœ বসবাসের ওপর ওবায়দুল কাদের বক্তব্য মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করার শামিল। ক্ষমতার মোহে মশগুল হয়ে আওয়ামী নেতারা মনের বিকারে প্রলাপ বকতে গিয়ে এখন সাম্প্রদায়িকতাকে সামনে নিয়ে আসছে। তারা ক্ষমতায় থাকার জন্য রাষ্ট্র সমাজের স্থিতিকে ভেঙ্গে ফেলতে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠি ক্রমাগত জনবিচ্ছিন্ন হতে হতে ব্যর্থতার অন্ধগলিতে পথ হারিয়ে এখন চক্রান্তের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সেই জন্য তারা সাম্প্রদায়িকতার ধ্বজাতুলে কোন খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাচ্ছে।
ওবায়দুল কাদেরকে পরিস্কার বলতে চাই- কোনো প্রকার উস্কানি দিয়ে লাভ হবে না। এদেশের সকল ধর্মীয় সম্প্রদায় অটুট ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে ঐক্যবদ্ধ। বরং শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে মন্দির গীর্জা ও প্যাগোডায় সবচেয়ে বেশী আক্রমণ হয়েছে। তার আমলেই সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে বেশী নির্যাতিত ও নিরাপত্তাহীন। তাদের ব্যক্তিগত, সাংগঠনিক ও ধর্মীয় সম্পত্তির ওপরও আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ-ছাত্রলীগের লোকেরা হামলা করেছে। আওয়ামী লীগের লোকেরাই তাদের ঘর-বাড়ি জায়গা জমি দখল করেছে, আগুন দিয়ে মন্দিরসহ তাদের উপাসনালয় জ্বালিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাহেব বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় আসলে এক লাখ মানুষকে হত্যা করা হবে। এ তথ্য কোন পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে সংগ্রহ করেছেন জনাব তোফায়েল আহমেদ-এটি জানতে জানতে চায়। এ তথ্যের উৎস কি হাসানুল হক ইনু, না সজিব ওয়াজেদ জয় ? এক লাখ লোক মারা যাওয়ার আশংকা করছেন কেন তোফায়েল আহমেদ? আপনাদের কোন অপকর্মের কারণে আপনাদের এ আশঙ্কা করছেন ?
এসময় তিনি বলেন, দেশব্যাপি আবারও নতুন করে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অথবা নিজেরাই নাশকতার মতো ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নামে মামলা দিয়ে নির্বাচারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। গত কয়েক দিনে প্রায় ৪ শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সরকার আতঙ্কে ভুগছে। গুম. খুন, বিচারবর্হিভূত হত্যা, দুর্নীতি দুঃশাসনের কাদায় আটকে পড়ে এখন বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে মরণ কামড় দিচ্ছে। পুরোনো মামলা চালু করা এবং নাশকতার অভিযোগ এনে দেশব্যাপি মামলা জড়ানো হয়েছে নেতা-কর্মীদের।
গত কয়েকদিনে বিভিন্ন জেলায় বিএনপি ও তার অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরে তাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান।
ব্রিফিংয়ে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সফু, শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ক্ষুদ্র ঋন বিষয়ক সম্পাদক এম এ মালেক, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ দপ্তর সম্পাদক মুনির হোসেন প্রমুখ। মানবজমিন

সর্বশেষ