spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

নুসরাত হত্যা : ছাত্রলীগ সভাপতিসহ দোসরদের বাচঁতে তদবীর শুরু!

spot_img

 

- Advertisement -

নিউজ ডেস্ক : তদবীর শুরু হয়েছে। বিভিন্ন দিক থেকে হত্যা মামলার আসামী ও তাদের দোসরদের পক্ষে একটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। এলাকাবাসী জানান, সোনাগাজীর সেই মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, যুবলীগ নেতা সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ, হাফেজ আবদুল কাদের এবং সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদুল আলম ও প্রভাষক আবছার উদ্দিনের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করেছে ওই গ্রুপটি। তারা রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্নাও দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন শিক্ষক জানান, আসামী পক্ষের লোকদের তদবীরের কারণে সংশ্লিস্ট নেতারা বলেছেন, পরিবেশ এখন ঘোলাটে। এখনই কোন তদবীর চলবে না। পরিবেশ একটু ঠান্ডা হলে তারা তদবীরে নামবে বলে জানিয়েছেন। তবে পুলিশ প্রশাসন রয়েছে কঠোর অবস্থানে। তারা নুসরাতের খুনীদের সঙ্গে কোন ধরনের আপোষ-রফায় যেতে রাজি নন।

এদিকে আসামীদের মধ্যে এ পর্যন্ত ওই মাদ্রাসার প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, পিয়ন নুরুল আমিন, আলাউদ্দিন, সাইদুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন ও আফসার উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ছাত্রলীগ সভাপতিকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। বিভিন্ন চালচতুরী করে সে গ্রেফতার এড়িয়ে যাচ্ছে।

অন্যদিকে ফেনীর সোনাগাজীতে মাদরাসাছাত্রীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা মামলার এজাহার পরিবর্তন করা হয়েছে। শুরুতে ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাকে প্রধান আসামি করে অজ্ঞাত পরিচয় চার জন ও তাদের সহযোগীকে আসামি করা হয়েছিল।

এবারে অধ্যক্ষকে প্রধান আসামি রেখে আরও সাত জনের নাম উল্লেখ করে তাদের আসামি করা হয়েছে এই মামলায়। তাদের সঙ্গে আসামি রাখা হয়েছে বোরকা পরিহিত অজ্ঞাতনামা চারজন ও তাদের সহযোগীদের।

সোমাবার রাতে মামলাটির এজহার পরিবর্তন করা হয়। এজাহার পরিবর্তন করে যুক্ত করা বাকি আসামিরা হলেন, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর মকসুদুল আলম, প্রভাষক আবছার উদ্দিন, মাদরাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, সাবেক ছাত্র নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহম্মদ ও হাফেজ আবদুল কাদের।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, সোমবার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আট জনের নাম উল্লেখ করে ও বোরকা পরিহিত চার জনসহ তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা মামলা দায়ের করেন ওই শিক্ষার্থীর ভাই।

ওই মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার নির্দেশে উল্লেখিত আসামিরা পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে তার বোনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

প্রধান আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলা একই শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গত ২৭শে মার্চ থেকে কারাগারে রয়েছেন। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত সাত জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

আটক সাত জন হলেন, মাদ্রাসার প্রভাষক আফসার উদ্দিন, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, পিয়ন নুরুল আমিন, আলাউদ্দিন, সাইদুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন ও আফসার উদ্দিন। এছাড়া ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের কাছ থেকেও জবানবন্দি নিয়েছে পুলিশ। ওসি জানান, মামলাটির রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের গ্রেপ্তারে থানা পুলিশের পাশাপাশি জেলা গোয়েন্দা পুলিশও মাঠে কাজ করছে।

উল্লেখ্য,, ১০৮ ঘণ্টা আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি। বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসক প্রফেসর রায়হানা আউয়াল বলেন, মৃত্যুর আগে তিনি লাইফসাপোর্টে ছিলেন।

৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় যান নুসরাত জাহান রাফি। মাদ্রাসাছাত্রী তার বান্ধবী নিশাতকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে, এমন সংবাদে তিনি ছাদে যান। সেখানে বোরকাপরা ৪-৫ জন তাকে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল সিরাজ উদ্দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতাহানির মামলা তুলে নিতে চাপ দেয়।

অস্বীকৃতি জানালে তারা রাফির গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রিন্সিপাল সিরাজউদ্দৌলা ও পৌর কাউন্সিলর মুকছুদ আলমসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা করেন অগ্নিদগ্ধ রাফির বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমান।এই মামলায় আসামিদের আইনি সহায়তা দেন বুলবুল।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ