প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সাম্প্রতিক জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সফরকে অত্যন্ত সফল ও ফলপ্রসু বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় এবারের আমার জাপান, সৌদি আরব এবং ফিনল্যান্ড- এই ত্রিদেশীয় সফর অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী রোববার বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সাম্প্রতিক ১১ দিনের ত্রিদেশীয় সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তৃতায় একথা বলেন। তিনি ২৮ মে থেকে ৭ জুন পর্যন্ত জাপান, সৌদি আরব ও ফিনল্যান্ড সফর শেষে শনিবার দেশে ফেরেন।
জাপান সরকারের আমন্ত্রণে গত ২৮মে থেকে ৩০মে পর্যন্ত তিনি জাপান সফর করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর জাপানে এটাই ছিল তার প্রথম রাষ্ট্রীয় সফর।
সফরে অর্থমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি ও শিল্প বিনিয়োগ উপদেষ্টা, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীসহ উচ্চপর্যায়ের সরকারি ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল তাঁর সফরসঙ্গী ছিলেন।
তিনি বলেন, ২৮মে সন্ধ্যায় তিনি জাপানে অবস্থিত বাংলাদেশী কমিউনিটি আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় যোগ দেন। সফরের দ্বিতীয় দিন ২৯ মে সকালে জাপানের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনি গোলটেবিল বৈঠকে মিলিত হন। এতে জাপানের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহী অথবা উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধগণ অংশগ্রহণ করেন। বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যগণও এতে অংশ নেন।
দু’দেশের মধ্যকার ব্যবসা-বাণিজ্যের পুরো সম্ভাবনা কাজে লাগানোর জন্য বৈঠকে তিনি জাপানি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আড়াইহাজারে জাপানি বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আলাদা অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করা হচ্ছে। তারা চাইলে অন্যান্য বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বা চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরীতে শিল্পকারখানা স্থাপন করতে পারেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সভায় জাপানের শীর্ষ ব্যবসায়ীগণ ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং তারা বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আশ্বাস দেন।
২০১৬ সালের ১ জুলাই ঢাকায় হোলে আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ৭ জন জাপানি নাগরিকের পরিবারের সদস্যগণ ঐদিন দুপুরে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি স্বজনহারা পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছি।
তিনি বলেন, ‘তাদের জানাই যে- হোলে আর্টিজান ঘটনার তদন্তে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে এবং এই জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে।’
বিকেলে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সেখানে পৌঁছলে প্রধানমন্ত্রী আবে আমাকে স্বাগত জানান। এ সময় সুসজ্জিত একটি দল আমাকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। ’
তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করায় প্রধানমন্ত্রী আবে আমাকে অভিনন্দন জানান। তিনি বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, মিয়ানমার থেকে আগত বাস্তচ্যূত রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা প্রদানের জন্য শিনজো আবে তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবিলায় বাংলাদেশকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।