শূণ্যতা পূরণে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন,

 

- Advertisement -

অন্যতম সংগঠক ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও সমাজকর্মী পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেছেন, সর্বনাশা বন্যায় ভাসমান, যখন মানবতা বিপর্যস্ত, জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত, কৃষকের ‘রক্তে বোনা ধান” উৎপাদন খরচের থেকে ৩’শ টাকা কম পাওয়া মিলার-ফড়িয়া, চাতাল মালিক প্রশাসন ও সরকারী দলের একাংশের সিংহভাগ ধানের মূল্য আত্মস্বাতের ঘটনা ঘটছে।

সেই ঘা এখনও শুকায়নি। সুশাসনের অভাব-নারী ও শিশু নির্যাতনের মহামারী কেবল ধর্ষন নয়-গণধর্ষনের ঘটনা শুধু বাড়ছেই না- ধর্ষিতা নারী-শিশুকে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারা, সংখ্যালঘু দমন-পীড়ন বিতারণের ঘটনা, পাহাড়ে ও সমতলে ছলতে থাকা আদিবাসী হত্যা, ধর্ষণ, গুম, গ্রেফতা, অপহরণের অব্যাহত ঘটনা, পাবর্ত চট্টগ্রাম চুক্তি একশ বছর পরও বাস্তবায়নে সরকারের অঙ্গীকারের অভাব ক্ষেত মজুর ও শ্রমজীবির জীবন এতা মূল্যহীন মর্যাদাহীন অতীতে দেখা যায়নি।

আজ প্রকশ্যে পথে জনসমক্ষে কুপিয়ে হত্যা, বিচারপতির এজলাসের টেবিলকে অপরাধীদের “অপারেশন টেবিল” বানানো এবং গণপিটুনীতে হত্যা হিড়িক ভীত সম্ভস্ত আতংঙ্কগ্রস্থ করে তুলেছে প্রতিটি নরনারী । ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিকে (ন্যাপ) পূণঃগঠন করতে বৃহত্তর রংপুর গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘জাতীয় শূণ্যতায় জাতীয় বিকল্প গড়ে তুলি’ শ্লোগানকে সামনে রেখে রংপুর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আফজাল।

প্রধান বক্তা ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও সমাজকর্মী পঙ্কজ ভট্টাচার্য। ঐক্য ন্যাপ রংপুরের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সালেহ্ আহমেদ, বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুর মোহাম্মদ তালুকদার, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দরা। এতে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের দুই শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেয়। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন, ঐক্য ন্যাপের সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য মোঃ আব্দুল হালিম বিপ্লব।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, প্রকৃত জনকল্যাণের রাজনীতি যা বর্তমানে অচল তা ফেরত আনতে হবে। সরকারের প্রশাসন নির্ভরতা, প্রধান বিরোধী দলের গণআস্থা অর্জনে যে ব্যর্থতা, জামায়াত-নির্ভরতা তার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক শূণ্যতা পূরণে প্রকৃত অর্থে দেশের রাজনৈতিক শূণ্যতা প্রকট হয়ে উঠেছে। উক্ত রাজনৈতিক শূন্যতা এবং সরকারী দল নামধারীদের কর্তৃত্ববাদ, দূর্বৃত্তপনা, দূর্নীতিবলয় এবং আস্থাবান বিরোধী দলের অভাবে জামায়াসহ মৌলবাদী সশস্ত্র জঙ্গী গোষ্ঠি জাতীয় বিকল্প হয়ে উঠার আশংঙ্কা বেড়েছে। সে সম্পর্কে সজাগ থাকতে হবে। প্রতি বছর বন্যা কবলিত জেলায় স্বচ্ছল মানুষের সহায়তা নিয়ে দুঃস্থ মানুষের পাশে খাদ্য, বস্ত্র, ঔষধসহ ত্রাণ কাজ এবং প্রয়োজনে স্বেচ্ছাশ্রমে ঘর-বাড়ি নির্মাণের জন্য বাঁশ সংগ্রহ করে গৃহ নির্মাণ কর্মসূচী পালন করতে হবে।

বন্যা ত্রাণে সরকারের ব্যর্থতা ও দূর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। ধানের প্রকৃত মূল্যপ্রাপ্তি, সরকারী সহায়তা নিয়ে অসদাচারণ বন্ধে একতাবদ্ধভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। যে কোন গণবিরোধী সরকারী কর্মসূচীর প্রতিবাদ, কৃষক, নারী, শিশু সুরক্ষার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে আমাদের। শিশু-নারী ধর্ষণের অপরাধে নরপশুদের ফাঁসির আইন চালু করতে হবে। গুজব প্রচার ও গণপিটুনীতে হত্যা কঠিন আইনের অধীনে আনতে হবে। শতকরা ৫ ভাগের বাংলাদেশের পরিবর্তে শতকরা ৯৫ ভাগের বাংলাদেশ গড়তে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বেসরকারী কর্মচারীদের সরকারী কর্মচারীদের সমান পেনশন, বেতনভাতা দিতে হবে। শিক্ষিত-অশিক্ষিত, তরুণ-তরুণীদের ব্যাপক কর্মসংস্থান করতে হবে। অন্যথায় বেকারদের বেকার ভাতা প্রদান করতে হবে।

সঞ্চয়পত্রের উপর শতকরা ১০ ভাগ করারোপ বাতিল করে সুপার ধনিকের উপর কররোপ করতে হবে সরকারকে। ভর্তি হতে না পারা দুই ভাগের লক্ষ কৃষক সন্তানের ভর্তি ও শিক্ষা ব্যয় সরকারকে বহন করতে হবে। গরীব ও প্রান্তিক কৃষক, ক্ষেতমজুর ও শ্রমজীবি জনগণের জন্য পূর্ণ রেশনিং ব্যবস্থা চালু করতে হবে। সেই সাথে কৃষক-শ্রমিক-বিত্তহীন-নারী-আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিনা সুদে, স্বল্পসুদে ঋণ, ১০টাকা দিয়ে পাসবুক খোলার সুযোগ দিতে হবে। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে ঋণ মওকুফ করতে হবে। এছাড়া নির্বাচন সর্বস্তরে ব্যবস্থা জনগণ-নির্ভর করে তুলতে গণজাগরণ ঘটাতে হবে। যারা ভোট সে দেবে, যারে খুশি সে দেবে” এ অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। নেতৃবৃন্দরা বলেন, ১৯৫৭ সালে গঠিত ন্যাপ সময়ের বিবর্তনে ভেঙ্গে গেছে। সে সকল নেতৃবৃন্দদের আবার ঐক্যবদ্ধ করে ঐক্য ন্যাপ গঠন করে জনগণের ভোট-ভাতের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

সর্বশেষ