প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: বিএনপি করোনার এই বিশেষ পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় করোনা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সেল’ গঠন করেছে। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে উপদেষ্টা ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক করে ১৩ সদস্যের এই সেল গঠন করা হয়েছে। পরে বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হবে।
এই সেল দেশের করোনা পরিস্থিতি, চিকিৎসা, কৃষি উৎপাদন পর্যবেক্ষণসহ দলের ত্রাণ তৎপরতা পর্যবেক্ষণ করবে। পাশাপাশি সরকারের কোনো তথ্যের গড়মিল থাকলে তা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হবে। রোববার রাতে ভিডিও কনফারেন্সে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সেল গঠনের এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দলের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
সেলের অপর সদস্যরা হলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ড্যাবের ডা. হারুন অর রশীদ, ডা. আবদুস সালাম, যুবদলের সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন ও ইকবাল হোসেন শ্যামল। এ প্রসঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, সেলের কাজ হবে করোনা পরিস্থিতি, চিকিৎসা, কৃষি উৎপাদন পর্যবেক্ষণ করা।
এই দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীরা সাধ্যমতো দুস্থদের সহযোগিতা করছে। ছাত্রদলের ছেলেরা পাকা ধান কেটে দিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততা পর্যবেক্ষণ করবে এই সেল। আমাদের পর্যবেক্ষণে সরকারের কোনো তথ্যের গড়মিল থাকলে তা জনগণকে জানাব। কেন্দ্রীয় সেল হয়েছে, বিভাগীয় কমিটিও হবে। বিভাগীয় কমিটি যদি মনে করে জেলা কমিটি গঠন করবে।
পর্যবেক্ষণ সেলের আহ্বায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, আমাদের পর্যবেক্ষণ সেলের কাজ শুরু হয়েছে। দেশের করোনা পরিস্থিতি দিন-দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। ত্রাণ তৎপরতা যেভাবে চলছে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। রোববার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে লন্ডন থেকে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা নিজ বাসা থেকে স্কাইপে যুক্ত হন। প্রায় দেড় ঘণ্টার এই বৈঠকে করোনা সংক্রমণ আরও ভয়ঙ্কর দিকে যাবে- দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞদের এমন মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা দলের সামর্থ্য অনুযায়ী করোনা যোদ্ধা চিকিৎসক নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় পিপিই, দুস্থদের ত্রাণ ও কৃষি সামগ্রী নিয়ে পাশে দাঁড়াবে। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে করোনা পর্যবেক্ষণ সেল এবং বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে সেল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
সূত্র জানায়, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশের পর ২৫ মার্চ থেকে নেতাকর্মীরা দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, নেতাকর্মীরা বসে নেই। করোনার সংক্রমণের শুরু থেকেই কাজ করছে। সচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট ও মাস্ক এবং চিকিৎসকদের মাঝে পিপিই বিতরণ করে আসছে। কিন্তু সরকারের ব্যর্থতায় পরিস্থিতি ভয়াবহ সংকটের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বিএনপি বসে থাকতে পারে না। মানুষ বাঁচাতে সামর্থ্য অনুযায়ী আমরা জনগণের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কেন্দ্রীয় সেল গঠন করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বসে ঠিক করবেন বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কমিটির দায়িত্বে কারা থাকবেন। এই কমিটি দেশের মানুষের খোঁজখবর রাখবে, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও অসহায় মানুষকে সেবা দেবে বিএনপি। সূত্র:: যুগান্তর