চীনে বিউবোনিক প্লেগে মৃত্যু, পুরো গ্রাম সিলগালা

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: চীনের স্বায়ত্তশাসিত ইনার মঙ্গোলিয়া অঞ্চলে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার পর সেখানকার পুরো একটি গ্রাম সিলগালা করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে কয়েক হাজার বাসিন্দাকে।

বৃহস্পতিবার ইনার মঙ্গোলিয়া কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য কমিশনের বরাতে রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। চীনে প্লেগের সংক্রমণ অস্বাভাবিক নয়। যদিও শতাব্দিপ্রাচীন এ প্লেগের প্রকোপ বর্তমানে বিরল হয়ে উঠেছে। ২০০৯ থেকে থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত চীনে মাত্র ২৬ জন বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১১ জন।

এক বিবৃতিতে ইনার মঙ্গোলিয়ার বাওতো পৌর স্বাস্থ্য কমিশন বলেছে, রোববার বাওতো শহরে বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়ে একজন মারা গেছেন। ওই ব্যক্তি বিউবোনিক প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে বৃহস্পতিবার নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, শরীরে রক্ত সঞ্চালন ব্যবস্থা বিকল হয়ে ওই রোগী মারা গেছেন। তবে ওই ব্যক্তি কীভাবে প্লেগে আক্রান্ত হলেন বিবৃতিতে তা উল্লেখ করা হয়নি। রোগটির বিস্তারের লাগাম টানতে কর্তৃপক্ষ সুচি জিনকুন গ্রাম সিলগালা করে দিয়েছে। মৃত ব্যক্তি ওই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। একই সঙ্গে প্রত্যেকদিন গ্রামের বাসিন্দাদের সবার বাড়িঘর জীবাণুমুক্ত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গ্রামের সব বাসিন্দার প্লেগ পরীক্ষা করা হলেও কাউকে এখন পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত পাওয়া যায়নি।

বাওতো পৌর স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, মৃত ব্যক্তির নিবিড় সংস্পর্শে আসা ৯ জন এবং তাদের সংস্পর্শে আসা আরও ২৬ জনকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। তাদের সবার প্লেগ পরীক্ষা করা হলেও নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। ইনার মঙ্গোলিয়ার দামাও বানার জেলায় অবস্থিত সুচি জিনকুন গ্রাম। প্লেগের সংক্রমণ প্রতিরোধে চলতি বছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই গ্রামটিতে তৃতীয় স্তরের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ইনার মঙ্গোলিয়ার দু’জনের শরীরে বিউবোনিক প্লেগ সংক্রমণের তথ্য নিশ্চিত করেছে চীন। তবে এ বছর এ রোগে এটিই প্রথম মৃত্যু। এর আগে গত জুলাইয়ে ইনার মঙ্গোলিয়ার বায়ান্নুর শহরে এক ব্যক্তির শরীরে প্লেগের সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে ওই এলাকায় তৃতীয় স্তরের সতর্কতা জারির পাশাপাশি জনপ্রিয় বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দেয়া হয়।

ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে ছড়ায় প্লেগ। মাছি অথবা সংক্রমিত অন্যান্য প্রাণীর মাধ্যমেও মানবদেহে এটির বিস্তার ঘটে। অনেক সময় এ রোগটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তবে সাধারণ অ্যান্টিবায়োটিকের চিকিৎসায় রোগটি থেকে সুস্থ হয়ে ওঠা যায়। চতুর্দশ শতাব্দীতে ‘ব্ল্যাক ডেথ’ মহামারি হিসেবে পরিচিত এ রোগে ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ায় প্রায় পাঁচ কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। প্লেগের তিনটি ধরণের মধ্যে বিউবোনিক প্লেগ তার একটি। এ রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা, শরীর ফুলে যাওয়া, জ্বর, সর্দি এবং কাশির মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।

সর্বশেষ