পুত্র সন্তান জন্ম দিতে না পারায় ঘর ছাড়া তিন সন্তানের জননী

মো.মুক্তার হোসেন বাবু:: চট্টগ্রামে পরপর তিন কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় ঘরছাড়া হতে হয়েছে এক গৃহবধূকে। গতকাল বুধবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের এস রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমনটি অভিযোগ করেন ওই গৃহবধূ গার্মেন্টস কর্মী রাশেদা বেগম। একই সাথে স্বামী এবং শশুরবাড়ির নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।
সম্মেলনে ওই গৃহবধূ শেলাবুনিয়া কবরস্থান পূর্ব এলাকার রাশেদা বেগম বলেন, ১৯৯৪ সালের ২ মার্চ নিকাহ্ রেজিষ্ট্রিমূলে বাগেরহাটের নলবুনিয়া গ্রামের মো. শাহ আলম তালুকদারের সঙ্গে বিয়ের পর চট্টগ্রামের ইপিজেডের সৈকত আবাসিক এলাকার নব্বই কলোনীর মাঈনুদ্দিন ম্যানসনে থাকতেন। দিনে গার্মেন্টে চাকরী, রাতে বাসায় সেলাই কাজ করে জমাকৃত ২ লাখ টাকা দিয়ে বেকার স্বামীকে ব্যবসায়ী বানিয়েও সংসারহারা হয়েছি।
তিনি বলেন, স্বামীকে ইলেকট্রিক সামগ্রীর দোকান খুলে দিতে আমার রক্ত পানি করা উপার্জিত সব টাকাই দিয়ে দিই। অভাবের সংসারে ১ম কন্যা লিমনকে লালন-পালন করতে মায়ের কাছে পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হই। ২য় কন্যা শাওনের জন্মের পর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। তৃতীয় কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ার পর অত্যাচার আরো বেড়ে যায়। চাকরীতে থাকাকালীন সময়ে ঘরে অসামাজিক কার্যকলাপ এবং ঘরে ফিরলে পুত্র সন্তানের দাবিতে নির্যাতন চলতো। বিভিন্ন থানায় কয়েকবার নারীসহ আটকও হয়েছে শাহ আলম। ২০১৯ সালের ২ নভেম্বর ব্যবসার জন্য আরো ২ লাখ টাকা দাবি করলে টাকা না পেয়ে তাকে মারধর করে বের করে দেয়। রাশেদা জানান, এ ঘটনায় চট্টগ্রাম আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হলে ইপিজেড থানা পুলিশ ঘটনার স্থান ও বর্তমান ঠিকানার উলে¬খ নাই বলে মিথ্যা প্রতিবেদন দেন। মামলায় তার আত্মীয় স্বজন সাক্ষী হওয়ায় সবাইকে চট্টগ্রাম ত্যাগের জন্য হুমকী দেওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ও প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়েছেন রাশেদা বেগম। সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাবেয়া খাতুন, লিনা আক্তার শাওন, সাবিনা বেগম, মোছাম্মৎ সোনিয়া, বিবি মরিয়ম, হাফেজ গোলাম রাব্বি হাসান মুন্না।

সর্বশেষ