মো.মুক্তার হোসেন বাবু :: চট্টগ্রামের চান্দগাঁওয়ে মা-ছেলের জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ধর্মের ভাই ফারুক নামের এক যুবককে খুঁজছে পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকে ফারুক নামের ওই ব্যক্তি পলাতক রয়েছেন। এদিকে গত সোমবার রাতে জোড়া খুনের শিকার গুলনাহার বেগমের মেয়ে ময়ুরী ধর্মের ভাই ফারুকের নাম ও অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে চাঁন্দগাও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এর আগে গত সোমবার রাতে পুরাতন চান্দগাঁও থানাধীন রমজান আলী সেরেস্তাদার বাড়ি এলাকার বাসায় গার্মেন্টস থেকে ফিরে মা গুলনাহার বেগম ও ভাই রিফাতের রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায় ময়ুরী। ঘটনার আকস্মিকতায় ময়ুরী চিৎকার দিয়ে উঠলে আশেপাশের মানুষ ঘটনাস্থলে আসেন এবং পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এসে প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেন এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
চাঁন্দগাও থানা পুলিশ জানায়, গুলনাহার বেগমের লাশ বাথরুমে ও বাথরুমের বাইরে তার ৯ বছরের ছেলে রিফাতের রক্তাক্ত লাশ পড়েছিল। দুজনের শরীরে ধারালো অস্ত্রের প্রচুর আঘাত ছিল। রিফাতের গলা কাটা ছিল।
এদিকে মামলার এজহারে ময়ুরী উল্লেখ করেন, তার মা গুলনাহার বেগম (৩৩) ধর্মের ভাই ডেকেছেন ফারুককে। ফারুক দীর্ঘদিন ধরে তাদের বাসায় যাওয়া আসা করেন। গত কিছুদিন ধরে মায়ের সাথে ফারুকের বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায় ঝগড়া হতো দুজনের মধ্যে। এ বিষয়ে ময়ুরী বলেন, সম্ভবত আক্রোশের বশবতী হয়ে মাকে ফারুক খুন করেছেন। যার আক্রোশের শিকার শিকার হয়েছেন ৯ বছরের ভাই রিফাতও।
এলাকাবাসী বলছেন, জোড়া খুনের ঘটনার পেছনে নিশ্চয় পরকিয়া কাজ করেছেন। হয়তো গুলনাহার বেগম ফারুকের সাথে সেভাবে আর জড়াতে চাচ্ছিল না। যার কারণে ফারুক ঘরে ঢুকে মা-ছেলেকে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খুন করেন। অন্য একটি পক্ষ বলছেন, পরকিয়া নয়, ধর্মের ভাইয়ের সাথে টাকাপয়সা নিয়েই বিবাদ ছিল গুলনাহার বেগমের। টাকা পয়সার বিবাদেই খুনের শিকার হয়েছেন গুলনাহার বেগম ও তার ছেলে রিফাত।
এদিকে পুলিশ বলছে, ঘটনার পরপর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) ও সিআইডির একটি টিম। এছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। বর্তমানে যে যার জায়গা থেকে ঘটনাটি ছায়া তদন্ত করছেন।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, জোড়া খুনের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। খুনের শিকার গুলনাহার বেগমের মেয়ে ময়ুরী বাদী হয়েই মামলাটি করেছেন। মামলায় তার মায়ের ধর্মের ভাই হিসেবে পরিচিত একজনকে আসামি করেছেন। মামলাটি আমলে নেয়া হয়েছে এবং ফারুকের সম্ভাব্য ঠিকায় গিয়ে তাকে খুঁজা হয়েছে। তবে সে বর্তমানে লাপাত্তা রয়েছেন। তাকে প্রযুক্তিসহ বিভিন্নভাবে খুঁজা হচ্ছে। আশা করি দ্রæতই সে ধরা পড়বেন।