মো.মুক্তার হোসেন বাবু :: চট্টগ্রাম মহানগরীর পুরাতন চান্দগাঁও এলাকার চাঞ্চল্যকর মা-ছেলে খুনের প্রধান ও একমাত্র আসামি কথিত ধর্মের ভাই ফারুককে ঘটনার ৩৭ দিন পর গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭। গ্রেফতারের পর টিভি সিরিয়াল ক্রাইম পেট্রোল দেখে হত্যাকান্ডের কৌশল শিখেছে বলেও র্যাবকে জানায় ফারুক। গ্রেফতার এড়াতে সে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-৭ চান্দগাঁও কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল। তিনি বলেন, ভোরে নগরের আকবরশাহ থানাধীন পাক্কার মাথা এলাকা থেকে ফারুককে আটক করে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজের নেতৃত্বে একটি টিম। ফারুকের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, দুই রাউন্ড গুলি ও একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়।
লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল জানান, হত্যাকান্ডের পরপরই র্যাব ছায়া তদন্ত শুরু করে। অভিযুক্ত ফারুককে ধরতে বেশ কয়েক জায়গায় অভিযানও চালানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে আকবরশাহ পাক্কার মাথা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত কোম্পানী কমান্ডার কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ বলেন, গুলনাহার বেগমের সঙ্গে দীর্ঘদিনের পরিচয় ফারুকের। নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো। গুলনাহার বেগম ফারুককে বকাও দিতেন। এ থেকে তার ওপর ক্ষোভের সৃষ্টি হয় ফারুকের। ঘটনার দিন কথা কাটাকাটির জেরে একপর্যায়ে গুলনাহার বেগমকে খুন করে ফারুক। এ ঘটনা দেখে ফেলায় গুলনাহার বেগমের ছেলে রিফাতকেও খুন করে।
কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ বলেন, হত্যাকান্ডের পরপরই গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপন করে ফারুক। প্রথমে চকবাজার এলাকায় গিয়ে রক্তমাখা জামা নালায় ফেলে দেয়। পরে নিজেকে অসহায় পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির মাধ্যমে খাগড়াছড়িতে গ্যারেজে কাজ নেয়। সেখানে কিছুদিন থাকার পর ফের চট্টগ্রামে এসে বিভিন্ন মাজারে ঘুরে আত্মগোপন করে। পরে আবার ঢাকায় গিয়ে একটি গ্যারেজে কাজ নেয়। স¤প্রতি ফারুক চট্টগ্রামে ফিরে আসে।
এদিকে মা ও ভাইয়ের হত্যাকারীকে আটকের বিষয়টি শুনে র্যাব-৭ কার্যালয়ে আসেন নিহত গুলনাহার বেগমের মেয়ে ময়ুরী। ময়ুরী বলেন, র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞতা- তারা আমার মা ও ভাইয়ের খুনিকে আটক করেছে। আমি খুনির ফাঁসি চাই।