৮ দিন ধরে বন্ধ চট্টগ্রামের ইউরিয়া সার কারখানা

গ্যাসের সংকটে গত ১৯ জুলাই থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা লিমিটেড কবে চালু হবে তা নিয়ে কারখানার (সিইউএফএল) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না। কারখানা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন এখানে আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
সিএফইউএলের বাণিজ্যিক শাখার একটি সূত্রমতে, গত প্রায় আট দিন টানা বন্ধ থাকায় বাংলাদেশ রসায়ন শিল্প সংস্থার (বিসিআইসি) এই প্রতিষ্ঠানের মোট আর্থিক ক্ষতি সাধিত হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রায় ৩৮ বছরের পুরোনো এই সার কারখানার বর্তমানে ইউরিয়া সার উৎপাদনের ক্ষমতা দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন। কিন্তু কারখানাটি উৎপাদন করে থাকে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। বর্তমানে এই কারখানায় উৎপাদিত প্রতি টন ইউরিয়া সারের মূল্য ১৪ হাজার টাকা।
সিইউএফএলের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মইনুল হক মঙ্গলবার ইত্তেফাককে বলেন, ‘সিইউএফএল মূলত গ্যাসের সংকটের কারণেই বন্ধ রয়েছে গত ১৯ জুলাই থেকে। কবে চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। আমরা কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা গ্যাস আগামী দু-এক দিনের মধ্যে দেবে বলেছে। কিন্তু কবে দেবে তার কোনো সুনির্দিষ্ট নিশ্চয়তা নেই। তিনি বলেন, কারখানাটি বন্ধ থাকায় প্রতিদিন আর্থিক ক্ষতি গুনতে হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এখানে লিকুইড অ্যামোনিয়া উৎপাদন বন্ধ থাকায় পাশের ডাবল অ্যামোনিয়া ফসফেট (ড্রাপ) সার কারখানাটির উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। কারণ সিইউএফএল থেকেই তারা তরল অ্যামোনিয়া নিয়ে ড্রাপ সারটি উৎপাদন করে থাকে।
সিইউএফএলের অপর একটি সূত্র জানায়, কারখানাটি ঘন ঘন বন্ধ হয়ে যাওয়া এখন একটি নিয়মে পরিণত হয়েছে। যান্ত্রিক ত্রুটির কথা বলে কারখানাটি বন্ধ রাখা হয়েছিল গত ৯ জুলাই থেকে ১৭ জুলাই পর্যন্ত টানা ৯ দিন। এই অচলাবস্থায়ও কারখানাটিকে উৎপাদন বন্ধ থাকার কারণে ক্ষতি গুনতে হয়েছিল আরো প্রায় ১৪ কোটি টাকার মতো। তার আগে প্রায় দীর্ঘ আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর কারখানাটি চালু হয়েছিল চলতি বছরের গত ২০ ফেব্রুয়ারি।
উল্লেখ্য, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই সার কারখানায় কর্মকর্তা-কর্মচারী মিলিয়ে সর্বমোট লোকবল রয়েছে ১ হাজার ৫৯ জন। কর্ণফুলীর দক্ষিণ পারে স্থাপিত এই কারখানার রয়েছে একটি নিজস্ব জেটি, যেখানে ভিড়তে পারে জাহাজ এবং নৌপথে এখান থেকে সার পরিবহনে রয়েছে ব্যাপক সুবিধা। এত সব সত্ত্বেও কারখানাটি প্রায়শই উৎপাদন বন্ধের শিকার হওয়ায় এটির দুর্বল ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইতিপূর্বে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।

- Advertisement -

ইত্তেফাক

সর্বশেষ