বিদেশের কোনো দেশ থেকে মালামাল নিয়ে কার্গো দেশে আসার পর খালাসের জন্য সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় হয় সমুদ্র বন্দরে। এ বন্দরে আমদানি পণ্য খালাস করতে সময় লাগে ১১ দিন ৬ ঘণ্টা। অন্যদিকে বিমান বন্দরে পণ্য খালাসের জন্য ব্যয় হয় ৭ দিন ১১ ঘণ্টা আর স্থলবন্দরে ১০ দিন ৮ ঘণ্টা। ডব্লিউসিও সহায়তায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের করা টাইম রিলিজ স্টাডি (টিআরএস)-২০২২ বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গিয়েছে।
সোমবার রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে এ জরিপের তথ্য তুলে ধরা হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ঢাকা, চট্টগ্রাম ও বেনাপোল বন্দরের ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২১ সালের বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রথমবারের মত টাইম রিলিজ স্টাডি প্রকাশ করেছে। অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত সুজানে মুয়েলার প্রমুখ।
এনবিআর টিআরএসের কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল হাকিম এ গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। টাইম রিলিজ স্টাডি ২০২২ অনুযায়ী, আমদানিকারক এবং কাস্টমস ব্রোকাররা কাস্টমস রিলিজ প্রক্রিয়ার তাদের প্রায় ৭২ থেকে ৭৮ শতাংশ সময় ব্যয় করে। বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রায় ১২ থেকে ২০ শতাংশ সময় ব্যয় করে এবং উল্লেখিত তিনটি কাস্টমস হাউজ কর্তৃপক্ষ একটি পণ্যের সামগ্রিক কাস্টমস রিলিজ প্রক্রিয়াতে মাত্র ৭ থেকে ৮ শতাংশ সময় ব্যয় করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনটি কাস্টমস পোর্টে ঢাকা কাস্টমস হাউসের গুরুত্বপূর্ণ ক্লিয়ারেন্স প্রক্রিয়াটি বেনাপোল কাস্টমস হাউস এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের চেয়ে দ্রুততর। ফার্মাসিউটিক্যালস ও গার্মেন্টস কাঁচামালের জন্য বেনাপোল কাস্টমস সময় নেয় ৯ দিন ১০ দিন এবং ঢাকা কাস্টমস থেকে ৮ থেকে ৫ দিন দায়িত্ব নেয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস ১৪ দিন ৯ দিনের বেশি সময় নেয়। মূলধন যন্ত্রপাতিতে তিনটি কাস্টমস ১২ দিনেরও বেশি সময় ব্যয় করে।
এ ধরনের জরিপ করার জন্য এনবিআরকে ধন্যবাদ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল বলেন, এ জরিপের মাধ্যমে কাস্টমস প্রক্রিয়ায় গতি আনতে পরবর্তীকালে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারবে এনবিআর। এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেন, আমাদের গবেষকরাও সব স্ট্যান্ডার্ড আন্তর্জাতিক মানের গবেষণা করতে পারেন। টিআরএস প্রতিবেদন আমদানি পণ্য খালাসে আরও গতি নিয়ে আসতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি আরো বলেন, সমাধানের জন্য সমস্যাগুলোকে ভেতর থেকে চিহ্নিত করা দরকার। তাহলে এনবিআরের পক্ষে সমাধানের সুবিধাজনক পথ বের করা যাবে।