নিম্নচাপে উত্তাল সাগর: নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ভারি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস

স্থূল নিম্নচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। উপকূলীয় নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। জোয়ারের পানি অস্থায়ীভাবে বেড়ে কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজারো মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।

- Advertisement -

এদিকে আজ মঙ্গলবার দেশজুড়ে দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

গতকাল সোমবার থেকে দেশের চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর এবং উপকূলীয় অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোয় ১ নম্বর সতর্কসংকেত জারি হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি অবস্থান করতে বলা হয়েছে।

বাগেরহাটে তিন দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারের সময় বিভিন্ন নদ-নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘পূর্নিমার জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে বেশকিছু এলাকায় পানি উঠেছে। তবে এতে কোন মানুষ বা প্রাণীর ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ এলাকায় খোঁজ খবর রাখছেন। কারও কোন বিপদ হলে বা খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন হলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বাগেরহাট পৌর শহরের রাহাতের মোড়, সাধনার মোড়, পূর্ব বাসাবাটি, কেবিবাজারেরে পিছনে, পুরাতন বাজার ভূমি অফিসের সামনে, মালোপাড়া, বাগেরহাট মাছ ও কাঁচা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সদর উপজেলার মাঝিডঙ্গা আশ্রয়ন প্রকল্প, চরগ্রাম, বিষ্ণুপুরসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কচুয়া উপজেলার ভান্ডারখোলা, নরেন্দ্রপুর, প্রতাপপুর, সাংদিয়া, আফরাসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিত মোরেলগঞ্জের প্রধান বাজার, উপজেলা পরিষদের অফিস চত্বর, তেলিগাতি, হোগলাপাশা, ফুলহাতাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের অনেক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া রামপাল, মোংলা, শরণখোলা উপজেলার বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রামপাল ও মোংলায় আর এক ফুট পানি বাড়লে প্রায় দুই হাজার চিংড়িঘের ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা স্টেশনের সহকারী স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, সুন্দরবনের প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকা তলিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত কোনো বন্য প্রাণী হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

বরগুনায় বিপত্সীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় চর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আউশ ধানের ক্ষতির আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জেলায় নদীর পনি বিপত্সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জোয়ারে ভোলার চরাঞ্চলসহ বেড়িবাঁধের বাইরের প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

পটুয়াখালীতে দিনভর মাঝারি ও ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ২০টি গ্রামের সহস্রাধিক বাড়িঘর পানিতে অর্ধনিমজ্জিত হয়ে গেছে।

বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, মঙ্গলবারের মধ্যেই স্থূল নিম্নচাপটি ক্রমে দুর্বল হয়ে যেতে পারে। দুই-এক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। পূর্বাভাসে বলা হয়, মঙ্গলবার ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৭১ শতাংশ থেকে শতভাগ স্থানে এবং বাকি তিন বিভাগে দমকা হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।

সর্বশেষ