spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

অসুস্থ রিজভীকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়ে কোর্টে আনা-নেওয়ার অভিযোগ স্ত্রীর

spot_img

প্রিয় সংবাদ বিডি ডেস্ক :: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কারাবন্দি রুহুল কবির রিজভীকে বৃহস্পতিবার কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে দাঁড় করিয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতে আনা ও নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তার স্ত্রী আরজুমান আর বেগম।

- Advertisement -

তিনি বলেন, রুহুল কবির রিজভী একজন বয়স্ক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি। তাকে সর্বদা লাঠির ওপর ভর দিয়ে চলতে হয়। সিঁড়ি বেয়ে উঠতে হলেও অন্যের সাহায্য দরকার হয়। এমন একজন ব্যক্তিকে সেই কেরাণীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে পুরনো ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে এবং দুপুর পৌনে বারোটার দিকে একইভাবে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা অমানবিক, অসাংবিধানিক ও নিষ্ঠুর আচরণ এবং মানবাধিকারের লংঘন।

রিজভীর স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম বলেন, রুহুল কবির রিজভী কারাগারে যাওয়ার আগে অনেকটা সুস্থ ছিলেন। কিন্তু কারাগারে যাওয়ার পর তার অসুস্থতা বেড়েছে। মুখের দিকে তাকালে চেনা যায় না। হাত ও মুখের চামড়া কেমন যেন কালচে হয়ে গেছে। এলোমোলো চেহারা। আসলে তাকে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে কিনা বুঝা মুশকিল।

তিনি আরও বলেন, একটি প্রিজন ভ্যানে করে আজ সকালে রিজভীকে কেরাণীগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম কোর্টে আনা হয়। আমি ঠিক জানি না প্রিজনভ্যানে বসার কোনো ব্যবস্থা থাকে কিনা? তবে রিজভীর সঙ্গে কথা বলে জানলাম পুরো রাস্তায় তাকে দাঁড় করিয়ে আনা হয়েছে। এসময় তাকে বিষন্ন দেখাচ্ছিল। ঠিক একইভাবে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে প্রিজনভ্যানে দাঁড় করিয়েই নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

রিজভীপত্নী বলেন, আদালতে রুহুল কবির রিজভীকে দেখার পর নিজেকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। তাকে চিনতে যে কারো কষ্ট হবে। রিজভী শারীরিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছেন। তার শরীর ভালো নেই। তার অবিলম্বে উন্নত চিকিৎসা দরকার। আমরা তার নিয়মিত খোঁজখবর পাই না। এর আগে গত ২৩ জানুয়ারি রিজভী কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।

রিজভীর স্ত্রী আরও বলেন, এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশ সত্ত্বেও রিজভীর সঙ্গে তাকে ও চিকিৎসককে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। সেদিন মামলার হাজিরার জন্য রিজভীকে কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে সিএমএম কোর্টে আনা হয়েছিল। সেদিন আদালতে আনার পর তাকে রাখা হয় হাজতখানায়। পরে তার শারীরিক অসুস্থতা ও মামলা-সংক্রান্ত বিষয়ে স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতের অনুমতি চান। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে সাক্ষাতের অনুমতি দেন। রিজভীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক রফিকুল ইসলামকেও সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু হাজতখানার ওসি রিজভীর সঙ্গে তার স্ত্রী ও ব্যক্তিগত চিকিৎসককে সাক্ষাৎ করতে দেননি। দুই ঘণ্টা কারাগারের হাজতখানায় রাখার পর সেদিন সাড়ে ১২টায় ফের রিজভীকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

রিজভীর আইনজীবী প্যানেলের সদস্য মশিউর রহমান শান্ত বলেন, রুহুল কবির রিজভী বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। তিনি শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ। তিনি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হার্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তিনি গত ৮ ডিসেম্বর থেকে পল্টন থানার মামলায় কারাগারে বন্দি। তার অসুস্থতা ও মামলাজনিত কারণে স্ত্রী আরজুমান আরা বেগম ও চিকিৎসকের সাক্ষাৎ দেওয়া জরুরি। এ বিষয়ে আমরা বিজ্ঞ আদালতের কাছে আবেদন করলে তা মঞ্জুর করা হয়। কিন্তু হাজতখানার ওসি আদালতের আদেশকে সেদিন বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন।

রিজভীর স্ত্রী বলেন, স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় রুহুল কবির রিজভী পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন। তখন দেশে ও পরে বিদেশে তার পেটে অস্ত্রোপচার হয়। এরপর মাঝেমধ্যেই তার পেটে সমস্যা হতো। সেই থেকে প্রায় ৩০ বছর ধরে রিজভী হাতের স্পর্শে খাবার খান না। খোলা পানিও খান না।

উল্লেখ্য বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের নেতাকর্মীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই দিনই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে সাড়ে চার শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। সেদিন রিজভীকেও আটক করে কারাগারে নেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ওইদিন গ্রেফতার কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে রুহুল কবির রিজভীই এখনও কারাগারে আছেন। বাকি সবাই জামিনে মুক্ত হন।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ