প্রিয়সংবাদ বিডি ডেস্ক :: কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি কমিটি। সরকারি বন্ধসহ নানা কারণে আগামী রোববার পর্যন্ত সময় পেয়েছে তদন্ত দল। এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অনেক আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবু সুফিয়ান।
তিনি বলেন, তদন্তের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাসহ অন্যদের জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। আগুন দেওয়ার একটি ভিডিও আমাদের হাতে এসেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
তদন্ত কমিটির প্রধান বলেন, প্রতিবেদন সুচারুভাবে তৈরির চেষ্টা করেছি। তবে এসব নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যস্ততার কারণে তা হয়ে ওঠেনি। ঊর্ধ্বতনদের কাছে সময় চেয়ে নিয়েছি।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১১ তে আগুন লাগার শুরু থেকে বিষয়টি ‘পরিকল্পিত নাশকতা’ বলে দাবি করে আসছিলেন রোহিঙ্গা নেতারা। ঘটনার জন্য রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মিকে (আরসা) দায়ী করছেন। আগুন দেওয়ার অনেক ভিডিও তদন্ত কমিটির কাছে সরবরাহ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
রোহিঙ্গাদের তথ্যমতে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় সশস্ত্র সংগঠন আরসার একচ্ছত্র অধিপত্য ছিল। সম্প্রতি ক্যাম্পগুলোয় অবস্থান নেয় আরেক সশস্ত্র সংগঠন ‘আরএসও’। এ ছাড়া রয়েছে বিভিন্ন নামে প্রায় অর্ধশত সন্ত্রাসী গ্রুপ। মাদক ব্যবসা, অপহরণ, ধর্ষণ, ডাকাতি, মারামারি ও খুনের সঙ্গে জড়িত এসব গ্রুপ-উপগ্রুপের সদস্যরা।
সর্বশেষ গত ৫ মার্চ বালুখালী ক্যাম্প ১১-তে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় ৯ ও ১০ নম্বর ক্যাম্পের ঘরও। সেখানে দুই হাজারের বেশি ঘর পুড়ে গেছে বলে জানায় শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন অফিস। গৃহহীন হয়ে পড়েন ১২ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা। ক্ষতিগ্রস্তরা পুনরায় মাথাগোজার ঠাঁই তৈরির চেষ্টা করছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং অন্য দাতা সংস্থা তাদের সহযোগিতা করছে।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে সাত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে আছে পুলিশ, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার, এপিবিএন, ফায়ার সার্ভিস, গোয়েন্দা সংস্থার একজন করে প্রতিনিধি। বৃহস্পতিবার কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা ছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটিকে জবানবন্দি দেওয়া একজন রোহিঙ্গা যুবক বলেন, রোববারের অগ্নিকাণ্ডে আরসা সরাসরি জড়িত। আরসার ক্যাম্প কমান্ডার ওয়াক্কাস (নুর হাবি), মৌলভি আতাউল্লাহ ও সোনা মিয়ার নেতৃত্বে ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়। সাধারণ রোহিঙ্গারা আগুন নেভাতে গেলে আরসা সন্ত্রাসীরা গুলি ছুড়ে বাধা দেয়। শুরুতে আগুন নেভানো গেলে এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না।