spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

রাজশাহীতে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে পুলিশ

spot_img

 

- Advertisement -

রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভীতিকর অবস্থা বিরাজ করছে নগরীতে। বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করছে পুলিশ। এতে এক ধাপ এগিয়ে রয়েছে সাদা পোশাকধারীরা। এ সময় কিছু কিছু কর্মীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে তারা। এরপর তাদের খোঁজ মিলছে রাজশাহীর পাশের জেলাগুলোতে। বাড়িতে যাদের পাওয়া যাচ্ছে না তাদের স্ত্রী ও সন্তানদেরও আটক করে থানায় নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

শুক্রবার গভীর রাতে ইসলামিয়া কলেজের অধ্যাপক হুমায়ুন আহমদের ধর্মপুরের বাড়িতে অভিযান চালায় মতিহার থানা পুলিশ। এ সময় তাকে না পেয়ে স্ত্রী ডেইজি বেগম ও দশম শ্রেণীতে পড়া সন্তান ওসামাকে আটক করে থানায় নিয়ে নির্যাতন করা হয়।

পরের দিন শনিবার গভীর রাতে নগরীর ডাশমারীতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে নিষেধ করে। পরে স্থানীয় জামায়াত কর্মী মুক্তির বাড়িতে অভিযান চালায়। সেখানে তাকে না পেলে তার স্ত্রী জুলেখা বেগম মায়া ও সন্তান জুলফিকার আলী মারুফকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

নগরীর ধরমপুরের একজন ভোটার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গত শনিবার রাতে র‌্যাব ও পুলিশের পোশাক পরে তার বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তাদের শাসিয়ে যায় যেন সকালের মধ্যেই এলাকা ছাড়েন। অন্যথায় তাদেরও গ্রেফতার করা হবে।

একই অভিযোগ করেছেন বিনোদপুরের একজন নির্বাচনী এজেন্ট। তিনি বলেন, আমার বাড়িতে রাতে পুলিশ গিয়ে না পেয়ে আমার মাকে গালি গালাজ করেছে। আমি যেন পোলিং এজেন্টের দায়িত্ব পালন না করি সে জন্য শাসিয়ে গেছে।

একই অভিযোগ করেছেন বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গতকাল দুপুর ১২টার পর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দফতরে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বুলবুল বলেন, ২৭ ও ২৮ জুলাই ধানের শীষ প্রতীকের পোলিং এজেন্টসহ ৩০-৩২ নেতাকর্মী গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো ক্ষেত্রে পোলিং এজেন্ট না পেয়ে তাদের বাবা ও ভাইদের গ্রেফতার করা হয়েছে।

প্রতিনিয়ত সাদা পোশাকে পুলিশ নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে এলাকায় না থাকার হুমকি দিচ্ছে। রাজশাহীতেও না থাকার হুমকি দিচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে যেতেও নিষেধ করছে। ধানের শীষের প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে নেতাকর্মীরা অবস্থান করলেই গ্রেফতারের হুমকি দিচ্ছে।
মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশন প্রত্যক্ষভাবে সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কাজ করছে। সরকারদলীয় মেয়রপ্রার্থীকে বিজয়ী করতে রাজশাহীতে প্রায় ৪০ হাজারের বেশি বহিরাগত সন্ত্রাসী অবস্থান করছে। সেই সাথে ১০টির বেশি কালো গ্লাসওয়ালা মাইক্রোবাস ঘোরাফেরা করলেও এই বিষয়ে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। গ্রেফতার থেকে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টরাও রেহাই পাচ্ছেন না। ২৩ পোলিং এজেন্টেকে এ পর্যন্ত গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সব গ্রেফতার নেতাকর্মী কোথায় আছে তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

সিটি করপোরেশন নির্বাচন (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর ধারা ৩, ৭ (গ) এবং নির্বাচন কমিশনের আদেশ বিনা ওয়ারেন্টে কাউকে গ্রেফতার করা যাবে না। এ আদেশ মানছে না পুলিশ।

বুলবুল বলেন, আমরা সব নির্যাতন-জুলুম সহ্য করে এখন পর্যন্ত নির্বাচনে আছি। কিন্তু সব কিছুরই সীমা থাকা উচিত। প্রশাসন-পুলিশ যেভাবে আওয়ামী লীগের মতো কাজ করছে, তাতে নির্বাচন পরিস্থিতি সুষ্ঠু নয়। প্রয়োজনে ভোটের দিন মাথায় কাফনের কাপড় বেঁধে মাঠে নামবো আমরা।

এ সময় মিজানুর রহমান মিনু বলেন, রাজশাহী শান্তির শহর। আমরা আশা করেছিলাম নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সহাবস্থান নিশ্চিত করবে। কিন্তু শান্তির এ শহর সন্ত্রাসের জনপদে পরিণত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, পুলিশের উচ্চাভিলাষী সদস্যদের প্রশ্রয়ে সরকারি দলের ক্যাডাররা তৎপরতা চালাচ্ছে। অনির্বাচিত সরকার নির্বাচিত মেয়র বুলবুলকে পদপদে হেনস্থা করেছে। ভোট শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভোটার, পোলিং এজেন্টদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও গ্রেফতার বন্ধের আবেদন জানান তিনি।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ