চলমান ছাত্র আন্দোলনের মাঝে গতকাল শনিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলার ঘটনায়ে ছাত্র নিহতের গুজব ছড়ানোর অভিযোগে আটক করা হয়েছে অভিনেত্রী নওশাবাকে।
শনিবার রাতে নওশাবাকে উত্তরা এলাকা থেকে আটক করে র্যাব-১ ব্যাটালিয়ন। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাত সাড়ে ১০টার দিকে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে আনা হয় নওশাবাকে। এরপরই আটক নওশাবাকে গ্রেফতার করার কথা জানায় র্যাব।
শনিবার রাত ১২টার দিকে র্যাব-১-এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ জানান, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উসকানি দেওয়ার জন্যই ফেসবুক লাইভে আসেন অভিনেত্রী কাজী নওশাবা আহমেদ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি এটা স্বীকার করেছেন।
গতকাল বিকেলে ফেসবুক লাইভে এসে জিগাতলায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় দুই ছাত্রের মৃত্যু এবং একজনের চোখ তুলে ফেলার খবর জানান কাজী নওশাবা আহমেদ।
শনিবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডির কার্যালয়ের কর্মীদের সংঘর্ষ বাধার পর জিগাতলা এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। বিকেল পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে চলা সংঘর্ষে হেলমেট পরা একদল যুবককে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দেখা গেছে। সংঘর্ষে শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর ‘গুজব’ ছড়িয়ে পড়লে অভিনেত্রী নওশাবা বিকেল চারটার দিকে ফেসবুক লাইভে আসেন।
লাইভ ভিডিওর শুরুতেই তিনি বলেন, ‘আমি কাজী নওশাবা আহমেদ বলছি, আপনাদেকে জানাতে চাই, একটু আগে জিগাতলায় আমাদের ছোট ভাইদের একজনের চোখ তুলে ফেলা হয়েছে, দুজনকে মেরে ফেলা হয়েছে।’
সকলকে এক হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আপনারা সবাই এক সাথে হোন। ওদের প্রটেকশন দিন প্লিজ। বাচ্চাগুলো আনসেইফ অবস্থায় আছে। আপনারা রাস্তায় নামেন প্লিজ।’
আন্দোলনকারী ছাত্রদের রক্ষা করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে নওশাবা বলেন, ‘যদি সরকার প্রটেকশন দিতে না পারে, তবে মা-বাবা হয়ে, ভাই-বোন হয়ে ছেলে-মেয়েগুলোকে প্রটেকশন দিন, এটা আমার রিকোয়েস্ট।’
যে ছাত্রটির চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে, সে জিগাতলা হাইস্কুলের দাবি করে এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘এদেশের নাগরিক হিসেবে, মানুষ হিসেবে রিকোয়েস্ট করছি, জিগাতলায় স্কুলের ছেলের চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে।”
ছাত্রলীগ এই হামলা করেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘একটু আগে অ্যাটাক করেছে, ছাত্রলীগের ছেলেরা। তারা জিগাতলায় আছে। আপনারা এখনই নামবেন, আপনাদের বাচ্চাদের নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাবেন। ট্রাফিক যে পুলিশরা আছেন, প্লিজ আপনারা নিজের দেশের বাচ্চাদের প্রটেকশন দেবেন। কিছু একটা। সরকার যদি দায়িত্ব নিতে না পারে, তবে জনগণ কিসের জন্য আছি আমরা? আমরা ৭১ দেখেছি, বায়ান্ন দেখেছি, আমরা এবারও পারব।’
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়।