spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

আ’লীগ থেকে ডাকাডাকি করা হচ্ছে কিন্তু আমি ফিরে যাবো না-কাদের সিদ্দিকী

spot_img

 

- Advertisement -

ডেস্ক রিপোর্ট: আওয়ামী লীগ থেকে ডাকাডাকি করা হলেও আর দলটিতে ফিরে যাবেন না বলে জানিয়েছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম।

তিনি বলেন, এখন রাত-দিন আওয়ামী লীগে যাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করা হচ্ছে। কিন্তু আমি কিভাবে যাব? যে মতিয়া চৌধুরী আমার নেতার চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল, সে মতিয়া চৌধুরী-ইনুরা সেখানে বসে আছে। তাদের পাশাপাশি বসে রাজনীতি করব? আমার পক্ষে তা সম্ভব না।

রোববার (২৮অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিরোধ সংগ্রামীদের’ মিলনমেলার আয়োজনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, বাংলাদেশ এমন হবে জানলে অন্তত আমি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী মুক্তিযুদ্ধে যেতাম না। যে লতিফ সিদ্দিকীরা আওয়ামী লীগকে জন্ম দিয়েছিলেন, তাকেই দল থেকে বের করা হয়েছে! যারা তার স্যান্ডেল টেনেছেন, তারা এখন মন্ত্রী হয়ে বসে আছে।

তিনি বলেন, ‘৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় প্রতিরোধ গড়েছিলাম। কিন্তু জাতীয় ও রাষ্ট্রীয়ভাবে তার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। সেদিন যদি প্রতিবাদ করে ভুল করে থাকি, সে কথাটিও রাষ্ট্রীয়ভাবে জানাতে হবে। সেসব যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হোক। তাহলে অন্তত বলতে পারব, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর প্রতিবাদ করতে গিয়ে জেলে যেতে হয়েছে।

কাদের সিদ্দিকী বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চাই। যদি না দেওয়া হয়, তাহলে মুখ বুজে বসে থাকব না। আমি মনে করি, এই স্বীকৃতি আদায় হবে আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। একইসঙ্গে বলতে চাই, কোনো মানুষ যদি পিতৃপরিচয় হারিয়ে ফেলে, কেউ যদি পিতৃপরিচয় অস্বীকার করে, তাহলে তার আর কিছু থাকে না। তাকে কিন্তু সামাল দেওয়া খুব কঠিন হয়ে যায়। এটা মনে রাখতে হবে।

কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বলেন, প্রায় ১৯ বছর আমরা দুই ভাই পাশাপাশি কোনো জনসভায় বসিনি। খুব সম্ভবত এক জানাজায় আমরা একত্রিত হয়েছিলাম। বঙ্গবন্ধু জেল থেকে বের হলে আমরা তার সঙ্গে তখন কথা বলতে পেরেছি। আমার বাবা কথা বলতে পেরেছেন। কিন্তু এই প্রথম ১৯ বছর পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য, দেখা করার জন্য তিন তিনবার চেষ্টা করেছি। তার পিএসদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাইনি। তাকে না পেয়ে শেষে চিঠি দিয়েছি। যেন এই অনুষ্ঠানে সরকারের তরফ থেকে সহযোগিতা করা হয়। কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি।

কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, আজকের এই মিলনমেলায় প্রতিরোধ-যোদ্ধারা যেন না আসতে পারে, সে জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইয়াহিয়ার জন্য রাস্তাঘাট বন্ধ করেছিলাম। কিন্তু দেশের ভেতর এমন শত্রুতা আগে কখনও দেখিনি। এসময় নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, একজন একদিকে শ্রমিক নেতা, অন্যদিকে সরকারের মন্ত্রী। তিনি আজ রাস্তাঘাট বন্ধ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আজকে চারদিকে সরকারের জয়জয়কার। যেদিকে তাকাই, সেদিকেই আওয়ামী লীগ, সেদিকেই শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে আমরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াব, জানি না। কারণ আল্লাহ কখন কার জন্য কী লিখে রাখেন, আমরা কেউ জানি না। তিনি বলেন, রাজনীতির জন্য এই সভা আহ্বান করা হয়নি। মুক্তিযোদ্ধাদের মিলন মেলা এটা। রাজনীতি যারা করে তারা শুধু ক্ষমতা দেখে। অনেকের মধ্যে কোনো কৃতজ্ঞতাবোধ নেই।

অনুষ্ঠানে কাদের সিদ্দিকীর বড় ভাই ও সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কারও পাশে দাঁড়াই না। ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে দাঁড়াই। এ জন্যই পত্রিকায় দেখে আমন্ত্রিত না হয়েও চলে এসেছি। রাজনৈতিক নেতৃত্বে কাদের সিদ্দিকীকে স্বীকার করি না, তবে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও ১৫ আগস্ট পরবর্তী প্রতিরোধযুদ্ধকে স্বীকার করি। তার নেতৃত্বেই সেদিন প্রতিরোধযুদ্ধে জয়ী হয়েছিলাম। বক্তৃতা করব না, কারণ আমি যা বলব তা বোঝার ক্ষমতা, প্রজ্ঞা এ দেশের রাজনীতিবিদদের নেই। কারও বিরুদ্ধে বলি না, কারণ তাদের বিরুদ্ধে বললে তা ধারণ করার যোগ্যতা তারা রাখে না। তারা ড্রয়িং রুমের নেতা। তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায় হোক— সে দাবিও জানান।

অনুষ্ঠানে কাদের সিদ্দিকীর ভাই বাবুল সিদ্দিকী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা বীরপ্রতীক, অর্থ সম্পাদক আবদুল্লাহ বীরপ্রতীক, কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী ও সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান কায়সার চৌধুরীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ