রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরিন বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থার উপর সাধারণ মানুষের আস্থা উঠে যাবার দশা হয়েছে। ফলে গণতন্ত্রের প্রথম শর্তই পূরণ করতে পারছে না বাংলাদেশ। নির্বাচনের বদলে এখানে কার্যত হয়েছে সিলেকশন। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।
গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয় হচ্ছে মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা। এজন্য আমার কাছে মনে হয় যে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে দাবি করার জায়গাটি ক্রমশ সেখান থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। শুক্রবার বিবিসি বাংলাকে তিনি আরো বলেন, সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দাবি করার জায়গায় নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে কার্যকর গণতন্ত্র আছে কি না এটি নিয়ে গত কয়েক বছরে বিভিন্ন পশ্চিমা মাধ্যমে নানা প্রশ্ন উঠেছে। গত বছরের মার্চে জার্মান প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’ তাদের রিপোর্টে বলেছিল বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে এখন গণতন্ত্রের নূন্যতম মানদন্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না । তিনি আরো বলেন, সর্বশেষ নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্য ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ) যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে ‘গণতান্ত্রিক’ দেশের তালিকায় নেই বাংলাদেশ। তারা বাংলাদেশকে ‘হাইব্রিড রেজিম’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হাইব্রিড রেজিমের কিছু বৈশিষ্ট্য তারা তুলে ধরেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনে বেশ অনিয়মের ঘটনা ঘটে, বিরোধী দল এবং প্রার্থীর ওপরে সরকারি চাপ খুবই সাধারণ ঘটনা। দুর্নীতির বিস্তার প্রায় সর্বত্র এবং আইনের শাসন খুবই দুর্বল। সিভিল সোসাইটি দুর্বল এবং সাধারণত, সাংবাদিকেরা সেখানে হয়রানি ও চাপের মুখে থাকে এবং বিচার ব্যবস্থাও স্বাধীন নয়।