সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত হয়ে জোটের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নেয়ায় জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মির্জা আলমগীর বলেন, ইতিমধ্যেই গণফোরাম ও ঐক্যফ্রন্ট থেকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই কাজের মাধ্যমে তিনি জনগণের সামনে নিজেকে অত্যন্ত ছোট ও ক্ষুদ্র করে ফেলেছেন। তিনি একটি দখলদারী সরকার ও জনপ্রতিনিধিত্বহীন একটি সংসদে যোগ দিয়ে নিজেকে শুধু ক্ষুদ্রই করেননি, জনগণের সঙ্গে প্রতারণাও করেছেন। মনসুর সংসদে যাওয়ায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি নন। ফ্রন্টে যারা আছেন তারা সবাই ঐক্যবদ্ধ ও একসঙ্গে আছে। খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে বিএনপি সংসদে যাবে এমন আলোচনা শোনা যাচ্ছে, এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, এ ধরনের কোনো আলোচনা হয়নি। এটা সম্পূর্ণ গুজব।
নারী দিবসের বিষয়ে তিনি বলেন, আজকে নারী দিবস এমন এক সময়ে আমাদের মাঝে এসেছে যখন বাংলাদেশের নারীরা সবচেয়ে বেশি নিগৃহীত হচ্ছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের কথা, আজকে একজন নারী যিনি বাংলাদেশের নারী জাগরণের জন্য আন্দোলন করেছিলেন।
নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছেন, মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন। তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্ধকার কারাগারে রাখা হয়েছে। আজকে এই দিনে আমাদের ও নারী সমাজকে শপথ নিতে হবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আমরা নারী সমাজের যে আন্দোলন, তাকে আমরা আরো বেগবান করতে চাই। কারণ বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। নারী সমাজের মুক্তিও খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে জড়িত। তাই আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই খালেদা জিয়া ও নারী সমাজকে মুক্ত করি। মির্জা ফখরুল বলেন, এই দখলদার সরকার সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে জনগণের অধিকারকে বঞ্চিত করে, ক্ষমতা দখল করেছে। এই সরকার আজকে সমস্ত জাতির উপর অত্যাচার নির্যাতন চালাচ্ছে। তারা আজকে আমাদের মা-বোনদের রেহাই দিচ্ছে না। তাদেরকে নির্যাতন করে কারাগারে পাঠাচ্ছে। আজকে আমরা অত্যন্ত ক্ষোভের সঙ্গে লক্ষ্য করছি আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনীতিক প্রতিহিংসার কারণে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। যিনি দীর্ঘকাল নারীদের জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা দখলদারী সরকার। জনগণের দ্বারা নির্বাচিত কোনো সরকার নয়।
আজকে সম্পূর্ণ বেয়াইনিভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীদের মতো জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। জনগণকে সমস্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তাদেরকে দমন নিপীড়নের মাধ্যমে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। আজকে এই নারী দিবসে আমাদেরকে শপথ নিতে হবে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে, নারী সমাজের আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে চাই। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তি, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। নারী সমাজের মুক্তিও খালেদা জিয়ার মুক্তির সঙ্গে জড়িত। তাই আসুন এই দিনে আমরা শপথ গ্রহণ করি, দেশনেত্রীর দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হই। এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। তাহলেই নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য দেন-সংগঠনের সহসভাপতি জেবা খান, নূরজাহান ইয়াসমীন, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ প্রমুখ।