ফেভারিট দল ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পাকিস্তানের দুর্দান্ত জয়

 

- Advertisement -

কি দুর্দান্ত জয়! এটাই পাকিস্তান। নিজেদের দিনে কেউ তাদের হারানোর ক্ষমতা রাখে না, সেটা আবারও তারা প্রমাণ করল বিশ্বকাপের ফেভারিট দল ইংল্যান্ডকে হারিয়ে। আবার যেদিন গণেশ উল্টে যায় সেদিন নরম দলের বিপক্ষেও তারা অনায়াসে বিধ্বস্ত হয়। ইংলিশদের ১৬ রানে হারিয়ে দুর্দান্ত জয়ে প্রথম ম্যাচ হারের পর নিজেদের স্বরূপে ফেরালো পাকিস্তান। পাকিস্তানের দেয়া ৩৪৯ রানের পাহাড়সম রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে জো রুটের (১০৭) ও জস বাটলারের (১০৩) রানের দুই সেঞ্চুরির পরও হার থেকে রক্ষা পায়নি ইংল্যান্ড। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় ইংলিশরা। সোমবার নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় ম্যাচটি শুরু হয়ে। টসে জিতে পাকিস্তানকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় ইংল্যান্ড অধিনায়ক ইয়ান মরগান।

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে তিন অর্ধশতকের ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৪৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।প্রথম ম্যাচ হেরে যাওয়া পাকিস্তান এই ম্যাচে একাদশে দুটো পরিবর্তন আনে। দলে ফিরেছেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার শোয়েব মালিক। আরো ফিরেছেন হাডহিটার আসিফ আলী। প্রথম ম্যাচের দল থেকে বাদ পড়েছেন হারিস সোহেল ও অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিম।

টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটি ভালো সূচনা এনে দেয় পাকিস্তানকে। ১৪.১ ওভারে দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক মিলে তোলেন ৮২ রান। ৫৮ বলে ৪৪ রান করে মইন আলির বলে ক্রিস ওয়াকসকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ইমাম আউট হলে দলীয় স্কোর বোর্ডে ২৯ রান যোগ করতেই ব্যক্তিগত ৩৬ রান করে ফেরেন ফখর জামানও। এরপর দলকে টেনে নেয়ার দায়িত্ব নেন বাবর ও হাফিজ। তৃতীয় উইকেট জুটিতে দুজনের ব্যাট থেকে আসে ৮৮ রান। ৬৬ বলে ৪ চার ও এক ছয়ে ৬৩ রান করে ক্যারিয়ারের ১২তম অর্ধশতক করে বাবর আজম ফেরেন মউন আলির তৃতীয় শিকার হয়ে। বাবর আজমের পর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মোহাম্মদ হাফিজ। ৪১ বলে ৫ চার ও এক ছয়ে ক্যারিয়ারের ৩৭তম অর্ধশতক করেন হাফিজ। ৬২ বলে ৮ চার ও ২ ছয়ে ৮৪ রান করে মার্ক উডের শিকার হন হাফিজ। ৪৪ বলে ৫৫ রান করেন সারফরাজ আহমেদ। আসিফ আলির ১৪, শোয়েব মালিকের ৮, শেষদিকে হাসান আলি ও শাদাব খানের অপরাজিত ১০ রানের ওপর ভর করে ৫০ ওভারে ৩৪৮ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।

ইংল্যান্ড বোলারদের মধ্যে মইন আলি ও ক্রিস ওয়াকস ৩টি এবং মার্ক উড ২টি উইকেট শিকার করেন।

৩৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ১২ রানে ইংল্যান্ড শিবিরে আঘাত হানেন লেগ স্পিনার শাদাব খান। ৮ রান করে শাদাবের এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার জেসন রয়। দলীয় ৬২ রানের মাথায় ব্যাক্তিগত ৩২ রানে ওয়াহাব রিয়াজের শিকার হয়ে ফেরেন আরেক ওপেনার জনি বায়েস্ট্রো। ৯ রান করে দলের ৮৬ রানে হাফিজের বলে বোল্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। মরগানের আউটে বিপাকে পড়ে ইংল্যান্ড। ব্যাট করতে নেমে ১৩ রান করে বেন স্টোকস ফেরেন শোয়েব মালিকের বলে সরফরাজারে কাছে ক্যাচ দিয়ে। খেলোয়াড়দের আসা-যাওয়ায়, এরপর দলকে এগিয়ে নেয়োর গুরু দায়িত্ব নেন ওয়ানডাউনে নামা জো রুট ও জস বাটলার। দুজনে মিলে গড়েন ১৩০ রানের জুটি। ইনিংসের ৬ষ্ঠ ওভারে মোহাম্মদ আমিরের বলে স্লিপে সহজ ক্যাচ মিস করে বাবর আজমের সে ভুলের খেসারত জো রুটের সেঞ্চুরি বানিয়ে দিতে হয়েছে পাকিস্তানকে। বিশ্বকাপের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে (১০৭) রান করার পর তাকে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে বেক থ্রো এনে দেন লেগ স্পিনার শাদাব খান। জো রুটের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি হাঁকালেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জস বাটলার। তবে ১০৩ রান করার পর তাকে মাঠে থাকা পছন্দ করেননি পেসার মোহাম্মদ আমির। ওয়াহাব রিয়াজের ক্যাচ বানিয়ে তাকে ফেরান আমির। শেষ দিকে মইন আলির ১৯ ওকিস ওয়াকসের ২১ রান জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানে থেমে যায় ইংলিশদের ইনিংস।

পাকিস্তানী বোলারদের মধ্যে ওয়াহাব রিয়াজ ৩টি, শাদাব খান ও মোহাম্মদ আমির ২টি করে উইকেট শিকার করেন। শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ হাফিজ নেন একটি করে উইকেট।ব্যাট হাতে ৮৪ এবং বল হাতে এক উইকেট নিয়ে নিয়ে ম্যাচ সেরা হন পাক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ।

সর্বশেষ