ন্যায় বিচার এই দেশ থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। তিনি বলেছেন, প্রায় প্রতিদিনই মানুষ গুম হচ্ছে বা তাদের গলাকাটা লাশ পাওয়া যাচ্ছে। ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ঘটছে। প্রতিদিন ভয়াবহ সংবাদ পড়তে হচ্ছে মানুষকে। একেই বলে নৈরাজ্য। বর্তমানে আমরা অরাজকতার চরম লগ্নে এসে দাঁড়িয়েছি।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, ফেনীতে নিখোঁজের সাত দিন পর স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার, লক্ষ্মীপুরে আলমগীর হোসেন নামে ব্যবসায়ীকে গলাকেটে হত্যা, হবিগঞ্জে কিশোর সুমন মিয়ার এক মাস ২০দিন পার হয়ে গেলেও কোনো সন্ধান মেলেনি। এগুলোই এখন সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম। খুন, ধর্ষণ, পিটিয়ে হত্যা, সারাদেশে ডেঙ্গুর মতোই ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলেধরা সন্দেহে দেশে বেধড়ক গণপিটুনি চলছে। ছেলেধরা গুজব, হত্যার ঘটনা পরিস্থিতি এমনই ঘোলাটে করে তুলেছে যে, অভিভাবকরা তাদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন ঘাতক ও মৃত্যুরই সহাবস্থান। আদালতও বলেছেন বিচার না হওয়ার কারণে অধরাধের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। ন্যায় বিচারও এদেশ থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছে। ডেঙ্গু রোগ নিয়ে তিনি বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে রোগী ও লাশের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। এখন ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গু রোগ ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছে। সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ব্যক্তির যে সংখ্যা প্রকাশ করা হচ্ছে সেটি প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে অনেক কম। অনেক প্রাইভেট হাসপাতাল এবং হাসপাতালে ভর্তি না হতে পেরে যারা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন তাদের সংখ্যা সরকারি পরিসংখ্যানে উল্লেখ করা হয় না। বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, সরকার ডেঙ্গু মহামারিতে আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করছে।
ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ডেঙ্গু আক্রমণের আগেই প্রস্তুতির অভাব এবং এই মহামারিতে সারাদেশ আক্রান্ত হওয়ার পরও সরকারের উচ্ছাস ও তামাশারও কোনো কমতি নেই। এ নিয়ে আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের ফটোসেশনে করছেন। এতে কাজ হবে না। প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা। দায়িত্বশীল আচরণ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহ দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ।