প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দলগুলোর দূরত্ব কমাতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সিদ্ধান্তের কথা শোনা যাচ্ছে।এক. খালেদা জিয়ার হয়ে মামলা লড়বেন ফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন। দুই. কারাবন্দি বিএনপি প্রধানকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন ড. কামালের নেতৃত্বে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।
গত বছর ১৩ অক্টোবর একাদশ সংসদ নির্বাচন ঘিরে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে ড. কামাল হোসেনকে শীর্ষনেতা করে গঠন করা হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই ফ্রন্টের একক শক্তি বিএনপি।দলটির কর্মী সমর্থক ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের কোনো সমাবেশ করার মত যোগ্যতা বা লোকবল শরীক দলগুলোর নেই। সভা সমাবেশে বিএনপির লোকবলের ওপর নির্ভর করে বক্তব্য দেন ফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা।এসব সমাবেশে ফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন নিজে থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তি চান না বা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম নেননি।বরং এসব অনুষ্ঠানে তিনি বঙ্গবন্ধুর গুণগান করেন। তাতে ক্ষুব্ধ হন বিএনপির নীতিনির্ধারকসহ নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীদের চাপে ঐক্যফ্রন্টের কর্মকান্ড থেকে নিজেদেরকে গুটিয়ে নেয় বিএনপি।ফলে গত এক বছরে উল্লেখযোগ্য কোনো কর্মসূচি নিতে ব্যর্থ হয় ফ্রন্ট।
জানা গেছে, বিএনপির সঙ্গে দুরুত্ব কমাতে ও ফ্রন্টকে গতিশীল করতে অতি সম্প্রতি ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন তার নিজদল গণফোরাম ও ফ্রন্টের শীরকদলগুলোর নেতারা। কিভাবে দূরত্ব কমিয়ে ঐক্যফ্রন্টকে সক্রিয়, গতিশীল ও ফ্রন্টের পরিধি বাড়ানো যায় তা নিয়ে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে একাধিকবার বৈঠক করেন শরীক দলের নেতারা।
বেছে নেয়া হয় ১৩ অক্টোবর ফ্রন্টের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিনটিকে।বৈঠকের সিদ্ধান্তনুযায়ী জাতীয় প্রেসক্লাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সেখানে ড. কামাল হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নাম না নেয়ায় বিএনপির কর্মীদের জিজ্ঞাসার মুখে পড়েন তিনি।এরপরই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে।সার্বিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে গত ২০ অক্টোবর ড. কামাল হোসেনের চেম্বার বৈঠকে বসেন ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির শীর্ষ নেতারা।ওই বৈঠকে সর্ব সম্মত সিদ্ধান্ত হয় ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রন্টভুক্ত দলের শীর্ষনেতারা খালেদা জিয়াকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন।অনুমিত নিতে ফ্রন্টের শরীক দল জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রবের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সচিবলয়ে তার অফিসে সাক্ষাত করেন। সম্মতি মেলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর।
সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া জেলে যাওয়ার পর ড. কামাল হোসেনকে আইনজীবী করার জন্য ২০১৮ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারী বিএনপির পক্ষ থেকে প্রস্তাব দেয়া হয়।কিন্তু ওই সময় তিনি বিএনপির ওই দাবিতে সাড়া দেননি। বরং বিএনপির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন।পরে একাধিকবার তাকে এই প্রস্তাব দেয়া হয় কিন্তু তিনি রাজি হননি। নতুন করে আবার আলোচনায় খালেদা জিয়ার হয়ে মামলা লড়াই করতে পারেন ড. কামাল হোসেন।ইতিমধ্যে তিনি খালেদা জিয়ার মামলার নথী দেখেছেন। তবে এবিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। মন্তব্য করেননি ড. কামাল হোসেন নিজেও।
চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী সুপ্রীম কোর্ট বার মিলনাতয়নে নির্বাচনত্তোর গণশুনানী অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার জামিনের ন্যাযতা নিয়ে কথা বলেন ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, যে কথা প্রায় সবাই আন্তরিকভাবে বলেছেন, যে আমাদের বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।তার মুক্তি অত্যন্ত যুক্তি সঙ্গত দাবি। অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি হওয়া উচিত। এই অনুষ্ঠান থেকে দাবিটা যাওয়া দরকার। এটা দুঃখজনক যে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পর এই ধরনের দাবি আমাদের করতে হচ্ছে। গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যারা ভূমিকা রেখেছেন।