‘জনদৃষ্টি অন্যত্র ফেরাতেই সরকার মুখরোচক অপকর্ম প্রকাশ করছে’

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: চলমান সংকট থেকে জনদৃষ্টি অন্যত্র ফেরাতেই সরকার নিজ দলের ‘মুখরোচক’ অপকর্ম প্রকাশ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, আজকে দেশে অর্থনৈতিক সংকট ও রাজনৈতিক সংকট চলছে। দেশে গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারটি আজকে বাংলাদেশের মানুষের মনে, সব মানুষের মাথায়। আজকে যখনই কোনো গভীর সংকট সরকারের সামনে আসে তখনই তাদের লোকজন যে সব অপকর্ম করছে- তা প্রকাশ করে দিয়ে জনগণের দৃষ্টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চায়।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট আয়োজিত ‘বেগম খালেদা জিয়া এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

ড. মোশাররফ বলেন, ক্যাসিনোবাজি-চাঁদাবাজির হচ্ছে। সর্বশেষে যুবমহিলা লীগের একজন সাধারণ সম্পাদিকা। আপনারা পত্র-পত্রিকায় তার সম্পর্কে দেখেছেন, আর্ও দেখবেন। যখন এই ধরনের ঘটনা ঘটে তখন সরকারের দায়িত্ব হল তাকে ওই দল থেকে বহিষ্কার করে দেয়া এবং পরে বলা হয় যে, এগুলোর সঙ্গে আমাদের কেউ নেই। আমাদের প্রশ্ন- এই সম্রাটরা, এই মহিলা সম্রাটরা যা কিছু করছে তারা কী পরিচয়ে করছে? আবরারকে বুয়েটে হত্যা করল যে দানবরা তারা কী নামে করেছে? সরকারি দলের ছাত্রলীগের নামে।

তিনি বলেন, এই সম্রাটরা সব প্রশাসনের চোখের সামনে বছরের পর বছর ক্যাসিনো চালাল কেউ দেখে না- এটা কী বিশ্বাসযোগ্য? আজকে যখন যুব মহিলা লীগ নেত্রী পাপিয়া এই কাণ্ড করেছে, ফেসবুকে আমরা দেখতে পারছি কতজনের সঙ্গে তার সম্পর্ক। র্যা বের পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিং করে বলা হয়েছে তার থেকে অনেক ভিডিও রেকর্ড পেয়েছে আপত্তিকর। আমরা দাবি করতে চাই, সব আমাদের জানানোর দরকার নেই। যে সব ব্যক্তি এর সঙ্গে জড়িত তাদের নাম অনতিবিলম্বে প্রকাশ করা হোক।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম এই সদস্য বলেন, সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হতে হবে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হওয়ার মানে হচ্ছে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হওয়া। এ সরকার নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। কারণ আজকের যে প্রধানমন্ত্রী তার যে ব্যক্তিগত লোভ, ব্যক্তিগত যে শাসন তা চরিতার্থ করার জন্য দেশের ১৬ কোটি মানুষকে জিম্মি করে রেখেছে। শুধু প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য।

তিনি বলেন, আজকের জনগণ নির্বাচন থেকে সম্পূর্ণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। কয়েকদিন আগে ঢাকায় সিটি নির্বাচন দেখেছি, সেখানে ১০ শতাংশ মানুষও ভোট দিতে যায়নি। ইভিএম তো তারা মেনুপুলেট করে উত্তরে ২৫ শতাংশ এবং দক্ষিণে ২৯ শতাংশ ভোট কাস্ট দেখিয়েছে। আসলে ১০ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে যায়নি।

ড. মোশাররফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী অর্থনীতি নিয়ে আতঙ্কিত। তাই তিনি (প্রধানমন্ত্রী) মানুষকে আওয়ামী কায়দায় চাপাবাজির মাধ্যমে আবারও বিভ্রান্ত করার জন্য বলেছেন- দেশের অর্থনীতি নাকি সিঙ্গাপুরের অর্থনীতির চেয়েও শক্তিশালী। বাস্তবতা হচ্ছে আজকে ৯-১১টি ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে আছে। শুধু সরকার টিকে থাকার জন্য তারা ব্যাংকগুলোকে সচল রেখেছে। এই ব্যাংকগুলো থেকে অর্থ লুট হয়েছে দুটি উপায়ে। একটি ভুয়া এলসি তৈরি করে, আরেকটি ভুয়া শিল্পপ্রতিষ্ঠান দেখিয়ে। এ সব করে তারা টাকা বিদেশে পাচার করেছে।

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ডের সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এটি একটি সততার পেশা। আপনারা জেনে-শুনে এ পেশায় এসেছেন। যদি পেশার প্রতি সম্মান থেকে থাকে তাহলে সরকার কী বলবে সেটাকে রিপোর্ট হিসেবে না দিয়ে রোগী হিসেবে খালেদা জিয়ার যে রিপোর্ট আসার কথা আপনারা দয়া করে হাইকোর্টে তা দেবেন। না হলে একদিন আপনারা জনগণের বিচারের সম্মুখীন হবেন। আমরা আপনাদের জনগণের বিচারের সম্মুখীন করতে চাই না।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমদ, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তাঁতী দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।

সর্বশেষ