প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: বিমানবন্দর ও সমুদ্র বন্দরের কারণে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি খুব বেশি বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি।
সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে হাম-রুবেলা টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আইসোলেশনের জন্য নগরী ও উপজেলা মিলে ৪৫০ শয্যা এবং কোয়ারেন্টাইন হিসেবে দুটি হাসপাতাল প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানান সিভিল সার্জন।
এদিকে ১৮ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) ও ১৪ উপজেলাধীন সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট ২১ লাখ ২৪ হাজার ৬৫০ শিশুকে হাম-রুবেলা টিকা দেয়ার কথা ছিল। তবে করোনা প্রতিরোধে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণায় এ টিকাদান কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ে হবে কি না তা নিশ্চিত করতে পারেনি সিভিল সার্জন কার্যালয়।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন বলেন, চট্টগ্রামে করোনা প্রতিরোধে এন্ট্রি পয়েন্টগুলোতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা জোরদার করা হয়েছে। তবে বিমানবন্দরে থার্মাল স্ক্যানার বসানো হলেও সমুদ্রবন্দরে হ্যান্ডহেল্ড স্ক্যানার দিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রামে করোনা মোকাবেলায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতি রয়েছে। আইসোলেশনের জন্য চট্টগ্রাম ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিসে (বিআইটিআইডি) ৫০টি, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ১০০টি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৩০টি, রেলওয়ে বক্ষব্যাধী হাসপাতালে ৩৭টি ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল এবং চসিক পরিচালিত কয়েকটি হাসপাতাল মিলে নগরীতে মোট ৩৫০টি শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
পাশাপাশি জেলার ১৪টি উপজেলার মধ্যে রাউজানে ৩০টি, হাটহাজারী, ফটিকছড়ি, আনোয়ারা, সীতাকুণ্ড ও বোয়ালখালী উপজেলায় ১০টি করে ৫০টি এবং বাকি আটটিতে পাঁচটি করে শয্যা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এর আগে করোনা আক্রান্ত দেশ থেকে বিদেশ ফেরতদের বাসা-বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আয়োজিত করোনা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নগরীর স্টেশন রোডের মোটেল সৈকতকে নির্ধারণ করা হয়।
বিদেশ থেকে আসা সবাইকে বাধ্যতামূলক ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখার মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের পর চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল ও রেলওয়ে হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রামে তিনটি এক্সপোর্ট প্রসেজিং জোন (ইপিজেড) এলাকায় কয়েকশ’ কারখানা রয়েছে। এ ছাড়া মিরসরাইয়ে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও কর্ণফুলী টানেল নির্মাণাধীন। ইপিজেডের কারখানা এবং নির্মাণাধীন বেশকিছু প্রকল্পে বিদেশি নাগরিকরা কর্মরত। তাছাড়া দেশের অন্যান্য জেলার চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ প্রবাসী নাগরিকের সংখ্যাও চট্টগ্রামে বেশি। মূলত এ কারণেই চট্টগ্রামে করোনার ঝুঁকি বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র:: যুগান্তর