মো.মুক্তার হোসেন বাবু :: চট্টগ্রামে দীর্ঘ প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের উচ্ছেদ অভিযান। সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ মার্চ দখলে থাকা রেলওয়ের জমি উদ্ধারে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিলো।দীর্ঘদিন উচ্ছেদ অভিযান না হওয়ার কারনে রেলওয়ের উচ্ছেদকৃত বিভিন্ন জায়গা ফের দখল করা হচ্ছে। নগরীর মুরাদপুর থেকে আমবাগান পর্যন্ত রেলওয়ের দুইপাশ দখল করে দোকান, কাঁচা বাজার ও বস্তি গড়ে তুলে এক শ্রেনীর লোক মাসে মাসে ভাড়া উত্তোলন করে লাভবান হচ্ছে। যার ফলে শিশু থেকে শুরু করে নারী পুরুষরা দূর্ঘটনার ঝুঁকিতে রয়েছে। এদিকে নগরের খুলশী থানার আমবাগান এলাকায় রেল লাইনের পাশে একটি অসাধু চক্র গড়ে তুলছে দোকান ও কাঁচা বাজার।
গতকাল রোববার দুপুরে আমবাগানের লেভেল ক্রসিং গেট এলাকায় দেখা যায়, ক্রসিং এর চারপাশের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হচ্ছে দোকান ও কাঁচাবাজার।এ জন্য বালু এবং ইট এনে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। অসাদু একটি চক্র গেইটম্যানকে ম্যানেজ করে অবৈধভাবে দখল করে এসব দোকান তুলছে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, অবৈধ বাজারের জন্য নিরাপত্তায় স্থাপিত রোড এপ্রোচ ওয়ার্নিং সিস্টেম নিরাপদ দুরত্ব থেকে দেখা যায় না। ফলে যেকোনো সময় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহাবুবুল করিম বলেন, আমরা যেখানে খবর পাচ্ছি সেখানে বাধা দিচ্ছি। তিনি বলেন, খুলশীর আমবাগানে রেলের জায়গায় ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার সময় বাধা দিয়েছি। রেলক্রসিং এলাকায় রেলের জায়গা দখল করে দোকান বা বাজার গড়ে তোলার বিষয়ে খবর নেওয়া হচ্ছে।
এর আগে নগরের খুলশী থানার সেগুনবাগান এলাকায় রেলওয়ের উচ্ছেদকৃত জায়গা দখল করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করার চেষ্টা করা হয়। এসময় পূর্বাঞ্চলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে বাধা দিলেও নির্মাণ করা ভবন উচ্ছেদ করা হয়নি। কয়েকদিন আগে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে পুরোদমে কাজ করতে সরকারের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এরপরও করোনা ভাইরাসের অজুহাত দিয়ে অভিযান বন্ধ রেখেছে ভূ-সম্পত্তি বিভাগ। ৫ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কবে আবার অভিযান পরিচালনা করা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত ৫০টি অভিযানে ৩৫ একর জমি দখলমুক্ত করেছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এতে প্রায় ১০ হাজার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব ও সীমানাপ্রাচীর না থাকায় এসব জমি পুনরায় দখল হয়ে যাচ্ছে। এখনও আরও অর্ধেকের বেশি জমি দখলে রেখেছে ভূমি খেকোরা। এদিকে ৩৫ একর জমি দখলমুক্ত করা হলেও সেগুলো এখনও দেয়াল বা কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে সংরক্ষণ করেনি প্রকৌশল বিভাগ। ফলে দখলমুক্ত করার পর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ না করায় জমির দখল ধরে রাখতে পারছে না রেলওয়ে। সুযোগ বুঝে ফের জায়গাগুলো দখলে নিয়ে নিচ্ছে এলাকাভিত্তিক প্রভাবশালীরা। সেখানে বসতি গড়ে ভাড়া দিয়ে মাসে টাকা নিচ্ছেন তারা। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে প্রকৌশল বিভাগের কাউকে পাওয়া যায়নি।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মাহাবুবুল করিম বলেন, এখনও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার জন্য শিডিউল ঠিক করা হয়নি। তবে কোথাও কোথাও রেলওয়ের জায়গা ফের দখল করে ভবন নির্মাণ করার সময় বাধা দিয়েছি বলে তিনি জানান।