‘এই সংকটে খোকার মতো দেশপ্রেমিকের বেশি প্রয়োজন ছিল’

 

- Advertisement -

প্রিয়সংবাদ ডেস্ক ::  বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে সাদেক হোসেন খোকার মতো ‘সাহসী ও দেশপ্রেমিকের’ খুব বেশি প্রয়োজন ছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে প্রয়াত এই বিএনপি নেতার স্মরণে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দেশে সংকট চলছে। এই যে রাজনৈতিক সংকট, এই সংকটে খুব বেশি প্রয়োজন সাহস, খুব বেশি প্রয়োজন ধৈর্যের, খুব বেশি প্রয়োজন দেশপ্রেমের।

সাদেক হোসেন খোকার বর্ণাঢ্য জীবন তু্লে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, এত জনপ্রিয় একজন মানুষ, এত দেশপ্রেমিক একজন মানুষ, এত সহনশীল একজন মানুষ আমি আমার জীবনে কম দেখেছি। উনি ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরবর্তীকালে অত্যন্ত সাহসী বীর এবং রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন, গেরিলা ছিলেন। সেই মানুষটি যখন জনগণের জন্য রাজনীতিতে আসলেন, দেখা গেল তার সেই সম্পৃক্ততাটা অভাবনীয়ভাবে একেবারে মানু্ষের সঙ্গে, মাটির সঙ্গে মিলে গেল। একেবারে মাটি থেকে উঠে আসা মানুষ ছিলেন খোকা ভাই।

খোকার সঙ্গে সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খোকা ভাইয়ের মতো এতো চমৎকার বন্ধুবৎসল মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। আমার মনে আছে, উনি যখন গোপীবাগের বাসায় থাকতেন, বাগান ছিল বাসার মধ্যে। ছোট একতলা বাসা। ঘুম থেকে উঠেননি তখনো, বাসাবোঝাই মানুষ। উনার বিছানায় গিয়ে বসে আছেন অনেকে।

‘এই যে জনগণের নেতা, মানু্ষের নেতা। আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তাকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন ভালোবাসতেন। উনি দেশনেত্রীকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। আমি যখন তার সঙ্গে শেষবার দেখা করি- উনি আমাকে বলেছিলেন, কখনো ম্যাডামকে ছেড়ে যাবেন না, ম্যাডামের সঙ্গে থাকবেন। এই কথাগুলো নিয়ে আমরা পথ চলছি। উনি আমার বয়সের ছোট হলেও আমি মনে করি উনি আমার নেতা ছিলেন। তার আদর্শকে আমি ধারণ করি, সেভাবে চলার চেষ্টা করি এখন।’

সাদেক হোসেন খোকা স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিএনপির প্রয়াত ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ৮দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয়তলায় আবদুস সালাম হলে তার জীবনীর ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র ‘গেরিলা থেকে জননেতা’ প্রদর্শিত হয়।

পরে নিচতলায় ক্লাব মিলনায়তনে খোকার ওপর দুইদিন আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব। অনুষ্ঠানে কবি শামসুর রহমানের গেরিলা কবিতা পাঠ করেন শাকিলা মবিন মৃধলা।

২০১৯ সালের ৪ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে স্নোয়ান ক্যাটারিং ক্যানসার সেন্টারে চিকিতসাধীন অবস্থায় মারা যান খোকা। পরে দেশে মরদেহ এনে জুরাইন কবরাস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে সাদেক হোসেন খোকা মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম ও সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে কল্যান পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্য সংস্থা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, বিএনপির সেলিমা রহমান, শওকত মাহমুদ, জয়নুল আবদিন ফারুক, হাবিবুর রহমান হাবিব, হাবিব উন নবী খান সোহেল, জয়নাল আবেদীন, শিরিন সুলতানা, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, নাসির উদ্দিন অসীম, আমিনুল হক, কাদের গনি চৌধুরী, সাদেক আহমেদ খান, শাহ নেছারুল হক, ফরিদা ইয়াসমীন, নজরুল ইসলাম তালুকদার, লেবার পার্টি মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাদেক হোসেন খোকার ছোট ছেলে ইশফাক হোসেন, চাচাতো ভাই মাশরুর হোসেনসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও প্রয়াত নেতার বন্ধু-বান্ধবরা উপস্থিত ছিলেন।

সর্বশেষ